ঘুষের টাকাসহ কাস্টমস কর্মকর্তা আটক
যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর অভিযানে ঘুষের টাকাসহ এক রাজস্ব কর্মকর্তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হলেও, পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেওয়ায় এলাকায় ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে যশোর জেলা দুদকের একটি বিশেষ টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।
দুদকের যশোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে দলটি হঠাৎ করে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন গ্রুপ-৬ এ প্রবেশ করে তল্লাশি চালায়। অভিযানে রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার অবৈধ ঘুষ লেনদেনের সহযোগী স্থানীয় একটি এনজিওর সদস্য হাসিবুর রহমানকে ঘুষের টাকাসহ আটক করা হয়।
দুদক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকেই নগদ টাকা উদ্ধার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এনজিও সদস্য হাসিবুর রহমানকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর ও মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও, রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক মহলে এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তারা অভিযোগ করেন, দুদক কর্মকর্তারা কাস্টমসের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে মূল অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ছেড়ে দিয়েছে এবং দায় চাপিয়ে দিয়েছে এনজিও সদস্যের ওপর।
এ ঘটনার পর বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সামনে স্থানীয় সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে “ঘুষখোর ঘুষখোর, দুদক ঘুষখোর” স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং দুদকের গাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পোর্ট থানা পুলিশের সহযোগিতায় শেষ রক্ষা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা বলেন, “দুদকের এমন হঠাৎ অভিযান স্বাগত, তবে অভিযানের পর আটক কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়া হতাশাজনক।’
দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদ বলেন, গোপন সূত্রে তথ্য পাই যে, কাস্টমস হাউসে নিয়মিত ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নগদ টাকাসহ বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার এক সহযোগীকে আটক করা হয়। পরে বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য কাস্টম কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তার সহযোগী স্থানীয় এনজিওর সদস্য হাসিবুর রহমানকে গ্রেফতার দেখিয়ে পোর্ট থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।