টাইগারদের থাবায় লণ্ডভণ্ড পাকিস্তান, জয়ের সুবাস বাংলাদেশের ডেরায়
রাজধানীর মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে লণ্ডভণ্ড পাকিস্তান, জয়ের সুবাস এখন বাংলাদেশের ডেরায়। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ১১০ রানে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের এই সংস্করণে এটিই দলীয় সর্বনিম্ন। আগের সর্বনিম্ন ১২৯/৭, ২০১৬ সালে মিরপুরেই এশিয়া কাপে।
দলীয় ৫০ রানের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে অভিনব এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় পাকিস্তান। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই জিইয়ে রেখেছিলেন ওপেনার ফখর জামান। কিন্তু তার বিদায়ে ফের ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ। শেষ দিকে আব্বাস আফ্রিদি ও খুশদিল শাহর নৈপুণ্যে মান বাঁচানো পুঁজি পায় পাকিস্তান।
রোববার (২০ জুলাই) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ দশমিক ৩ ওভারে ১১০ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। দলের হয়ে ৩৪ বলে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন ওপেনার ফখর জামান।
ফিল্ডিংয়ে নেমে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন শেখ মেহেদী। তবে মেহেদীর বলে শর্ট ফাইন লেগে ফখর জামানের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তাসকিন। অবশ্য পরের ওভারেই সেই ভুলের কিছুটা ক্ষতিপূরণ করেন এই পেসার। নিজের ওভারে সাইম আইয়ুবকে ফেরান তিনি। ডিপ ফাইন লেগে মোস্তাফিজ কোনো ভুল না করে নিখুঁত ক্যাচ ধরেন। সাইম ৪ বল খেলে করেন ৬ রান।
এরপর হারিস রউফকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন মেহেদী। তার ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে মাত্র এক বাউন্ডারি হাকিয়েই সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তানি এই ব্যাটার।
পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসে সালমানের উইকেটটি প্রায় পেয়ে গিয়েছিলেন টাইগার বোলার। তবে প্রথম বলেই ভাগ্যর জোরে রক্ষা পান পাকিস্তান অধিনায়ক—তার তোলা শটটি কাভার ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারির বদলে দুই রান হয়ে যায়। এরপর চার বল ধরে ব্যাটে–বলে সংযোগই ঘটাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ওভারের শেষ বলে উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৯ বল খেলে মাত্র ৩ রান করেন তিনি।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে উইকেট মিছিলে যোগ দেন মোস্তাফিজ। ওভারের প্রথম চার বলে মাত্র ১ রান দেওয়ার পর পঞ্চম বলেই উইকেট। স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে ডিপ থার্ডম্যান অঞ্চলে রিশাদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন হাসান নেওয়াজ। চার বল খেলে রানশূন্য থাকেন তিনি।
এরপর ক্রমেই চাপ বাড়ছিল পাকিস্তান শিবিরে।অবশ্য টানা ২৬ বলে বাউন্ডারি মারতে ব্যর্থ পাকিস্তান পঞ্চম উইকেট হারায় দলীয় ৪৬ রানে। মেহেদীর বলটা অন সাইডে ঠেলে ১ রান নিতে চেয়েছিলেন ফখর। দৌড়ে গিয়ে স্ট্রাইকিং প্রান্তে বল ছুঁড়েন মেহেদী। উইকেটকিপার লিটন যখন বেল ফেলে দেন, তখন ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি নেওয়াজ।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ওপেনার ফখর জামান। তবে এবার আক্ষেপের গল্প লিখলেই প্যাভিলিয়নের পথ দেখলেন। মোস্তাফিজের করা ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে তাসকিনের থ্রো ধরে স্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট ভাঙেন লিটন। এতে দুবার জীবন পাওয়া ফখর ৩৪ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন।
সপ্তম উইকেটে তরুণ আব্বাস আফ্রিদিকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় স্কোরশিট সচল রাখেন খুশদিল শাহ। এই জুটিতেই তিন অঙ্ক স্পর্শ করে পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ। তবে ১৭তম ওভারের প্রথম বলে রিশাদকে যেন ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে ফেরেন খুশদিল। ২৩ বলে ১৭ রান করে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজের ১৩৮তম উইকেট এটি।