ইতিহাস গড়তে রেকর্ড লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ
শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে কখনোই ওয়ানডে সিরিজ জেতেনি বাংলাদেশ। ২০১৩ ও ২০১৭ সালে দুটি সিরিজ ড্র করেছিল টাইগাররা। এবার বাংলাদেশের সামনে সেই সুবর্ণ সুযোগ। এমন সমীকরণে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন কুশল মেন্ডিস। অবশ্য লঙ্কানদের সংগ্রহ তিন শ' ছাড়ানোর সম্ভাবনা থাকলেও শেষমেশ দলকে লড়াইয়ে ফেরান টাইগার বোলাররা। তাসকিন-শামীমদের প্রত্যাবর্তনের দিনে ইতিহাস গড়ার মিশনে ২৮৬ রানের লক্ষ্য পেয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
সিরিজ জিততে বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হবে। এর আগে, ২০২৩ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৮০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে জিতেছিল টাইগাররা। এছাড়া এই ম্যাচ জিততে পারলে পাল্লেকেলেতে কোনো দলের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান তাড়া হবে এটি।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পাল্লেকেলেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে ১৮ বাউন্ডারিতে ১১৪ বলে ১২৪ রান করেন কুশল মেন্ডিস।
নতুন বলে শুরুটা ভালোই করেছিলেন তাসকিন আহমেদ ও তানজিম সাকিব। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন সাকিব। তার অতিরিক্ত বাউন্সড ডেলিভারি মাদুস্কার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ধরা পড়ে। মাত্র ১ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার।
তিনে নেমে উড়ন্ত শুরু করেন কুশল মেন্ডিস। আরেক প্রান্তে পাথুম নিশাঙ্কাও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এতে প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৫১ রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় উইকেটে ক্রমেই বড় হতে থাকা এই জুটি ভাঙেন তানভীর ইসলাম। ১৫তম ওভারে পাথুম নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান বাঁহাতি এই স্পিনার। ইমনের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪৭ বলে ৩৫ রান করেন এই ওপেনার।
১৯তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে আসেন মিরাজ। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই কামিন্দু ও মেন্ডিসের ৩৮ বলে ৩১ রানের জুটি ভাঙেন টাইগার দলপতি। মিরাজের অফ স্ট্যাম্পের ওপর গুড লেংথের ডেলিভারিতে এলবিডব্লু হয়ে ২০ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন কামিন্দু।
দলীয় ১০০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর আসালঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস। তাদের সাবলীল ব্যাটিংয়ে মাঝের ওভারগুলোতে বেশ চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দ্রুত ফিফটি স্পর্শ করেন আসালঙ্কা। ৮ চারে মাত্র ৬০ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তবে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। এতে ভাঙে তাদের ১১৭ বলে ১২৪ রানের জুটি। ৫৮ রান করে ফেরেন আসালাঙ্কা।
অন্যপ্রান্তে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন কুশল মেন্ডিস। ওয়ানডেতে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয়। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করার পর আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার। তবে কুশলের দুর্দান্ত ইনিংসের সমাপ্তি হয় শামীমের বলে। ১১৪ বলে ১৮ চারে ১২৪ রান করে টাইগারদের পার্টটাইম এই বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি।
এরপর দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই তাসকিনের বলে শামীমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দুনিথ ভাল্লালাগে (৬)। মাঝে ইনিংসের ৪৫তম ওভারের শেষ বলে হিট উইকেট হন জানিথ লিয়ানাগে। সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বলে ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
শেষদিকে লড়াই জিইয়ে রেখেছিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ১৪ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন হাসারাঙ্গা। এছাড়া ১০ রানে তাকে সঙ্গ দেন চামিরা।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ দুটি করে উইকেট নেন। এছাড়া তানভীর ইসলাম, শামীম হোসেন পাটোয়ারী এবং তানজিম হাসান সাকিব একটি করে উইকেট শিকার করেন।