২৯ মে ২০২৫, ১৮:০০

পদত্যাগ করবেন না বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ

ফারুক আহমেদ   © সংগৃহীত

গেল কয়েকদিন ধরেই বিসিবি সভাপতির পদ নিয়ে নানান জল্পনা-কল্পনা চলছে। গুঞ্জন ওঠেছিল, পদত্যাগ করতে পারেন ফারুক আহমেদ। মূলত বুধবার (২৮ মে) রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বিসিবি সভাপতির এক বৈঠক থেকেই এই গুঞ্জনের সূত্রপাত। যেখান দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে তাকে না রাখার বার্তা দেওয়া হয়।

এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি চাউর হয়। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে ইতোমধ্যে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন তিনি। তবে এর আগে অবশ্য ফারুককে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় তাকে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো কারণে ফারুককে সরিয়ে দেওয়া হলে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার খড়গ রয়েছে। যদিও এরই মধ্যে বিসিবি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফারুক। 

এ ব্যাপারে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিকে ফারুক বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি পদত্যাগ করব না। আমাকে বলা হয়েছে, সরকার নাকি আমাকে আর বিসিবি সভাপতি হিসেবে রাখতে চাইছে না। কিন্তু কেন রাখতে চাইছে না, সেটার কোনো কারণ তারা আমাকে বলেনি। বিনা কারণে তো আমি পদত্যাগ করতে পারি না।’

তবে ফারুকের এ সিদ্ধান্তকে বিসিবির কার্যক্রমে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে একটা কঠোর অবস্থান হিসেবেই দেখছেন ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক অধিনায়কের মন্তব্য, ‘এটা কোনো ছেলেখেলা নয়। যাকে ইচ্ছে হলো পদে বসালাম, আর ইচ্ছে হলো, যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই তাকে সরিয়ে দিলাম। এমনটা হলে ক্রিকেটও আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাবেক-বর্তমান অনেক ক্রিকেটারই ফারুককে পদত্যাগ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। কেননা, তিনি নিজ থেকে বোর্ডে আসেনি, বরং তাকে ডেকে এনে বোর্ডে বসানো হয়েছে।

সরকার যদি সরাসরি ফারুককে পদচ্যুত করে, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বিষয়টিকে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখাতে পারে। এতে দেশের ক্রিকেট নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। অতীতে বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা ভোগ করতে হয়েছিল।

এর আগে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে গত বছরের ৫ আগস্ট নাজমুল হাসানের বোর্ডে থাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলমকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের পরিবর্তে সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ এবং ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক নাজমূল আবেদীন ফাহিমকে এনএসসি নতুন পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়। পরে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক। এর আগে, নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

কিন্তু মাত্র ৯ মাস পর হঠাৎ করে সরকারই কেন ফারুককে সভাপতির পদ থেকে সরাতে চাইছে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন জেগেছে। যদিও গুঞ্জন উঠেছে, নতুন সভাপতি হিসেবে এরই মধ্যে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামের কথা ভেবে রাখা হয়েছে। কিন্তু ফারুক শীর্ষ পদে আদিষ্ট হওয়ায়, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে বিষয়টি কীভাবে সুরাহা করা হবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩১ মে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের যে সভা হওয়ার কথা, সেটি স্থগিত হতে পারে বলে জানিয়েছে বোর্ডের একটি সূত্র।