২১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৪

অবশেষে সেন্টমার্টিন রুটে চালু হচ্ছে জাহাজ চলাচল, প্রস্তুত ৭টি জাহাজ

সেন্ট মার্টিন রুটে চলাচলকারী জাহাজ  © সংগৃহীত

পর্যটকদের জন্য পহেলা নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে মালিকপক্ষ জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছিল। অবশেষে পহেলা ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলাচলের সিন্ধান্ত নিয়েছে তারা।

মালিকপক্ষ জানিয়েছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। এজন্য মোট ৭টি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে ।

‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস জুড়ে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিন রুটে সর্বোচ্চ ৭টি জাহাজ চলবে। তিনি বলেন, ‘১ ডিসেম্বর কয়টি জাহাজ চালু হবে তা নির্ভর করছে পর্যটকের সংখ্যা ও চাহিদার ওপর।’

প্রস্তুত থাকা জাহাজগুলো হলো— কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, বার আউলিয়া, এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন এবং আটলান্টিক ক্রুজ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানায়, ‘৭টি জাহাজের অনুমোদন এখনো শতভাগ সম্পন্ন না হলেও আগামী ১০ দিনের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। ইতোমধ্যে জাহাজ চলাচলের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।’

গত ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক প্রবেশ উন্মুক্ত হলেও শর্ত জটিলতার কারণে জাহাজ চলাচল সম্ভব হয়নি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নভেম্বরে পর্যটকদের দ্বীপে রাতযাপনের অনুমতি নেই দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে হয় কক্সবাজারে।

কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনের দূরত্বে জাহাজে যাত্রা করতে সময় লাগে ৭ থেকে সাড়ে ৭ ঘণ্টা। ফলে দিনে যাওয়া-আসা মিলিয়ে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টার সমুদ্রযাত্রায় মাত্র এক ঘণ্টা দ্বীপে ঘোরার সুযোগ থাকায় পর্যটকের আগ্রহ কমে যায়।

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, ‘ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দ্বীপে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকায় পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছি। সে অনুযায়ী সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন।’

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবালসমৃদ্ধ এই দ্বীপে নভেম্বরে শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পর্যটকরা দ্বীপে রাতযাপন করতে পারবেন। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।

কঠোর নিয়ন্ত্রণে ভ্রমণ সময়সূচি:

সেন্ট মার্টিনে থাকতে হলে মানতে হবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ১২ দফা নির্দেশনা। নির্দেশনাগুলো হলো, বিআইডব্লিউটিএ ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলতে পারবে না। টিকিট কিনতে হবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড বাধ্যতামূলক। সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ–ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক–ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্য ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। মোটরসাইকেল বা কোনো মোটরচালিত যান সৈকতে চলবে না। পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন করা যাবে না।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় ৯ মাসের জন্য সেন্টমার্টিনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকবে। তাই নভেম্বর থেকে জানুয়ারি এই তিন মাসই দ্বীপে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন পর্যটকেরা।