০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৪১

আওয়ামী লীগ নেতার ‘গোপন জামিন’, আদালত চত্বর অবরোধ 

বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি  © টিডিসি ফটো

শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পালকে জামিন দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় আদালতে কোনো বিচারক বা কর্মকর্তাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

চন্দন কুমার পালের জামিন বাতিলসহ সাত দফা দাবি জানিয়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—জেলা জজকে অপসারণ, পিপি ও সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) অপসারণ, চন্দন পালের জামিনে সহায়তাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা, প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার, শহীদ পরিবারের জন্য আইন সহায়তা সেল গঠন এবং মামলা বাণিজ্যে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা।

আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সংগঠক মাহামুদুর হাসান রাকিব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শেরপুরের প্রধান সমন্বয়কারী ইঞ্জিনিয়ার মো. লিখন মিয়া, যুগ্ম সমন্বয়কারী তান্না ইসলাম, জাতীয় যুবশক্তির জেলা কমিটির আহ্বায়ক মো. আশরাফুল আলম, সদর উপজেলা এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল হাসান দেওয়ান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক নিলয় ও আরাফাতুল তালুকদারসহ অনেকে।

আরও পড়ুন: প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাবি ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত, অন্যগুলো কবে

বক্তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। পরে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দিলে আমি বিষয়গুলো দ্রুতই সরকারের কাছে জানাব।’

প্রসঙ্গত, জামিন ইস্যুতে চন্দন কুমার পাল সম্প্রতি আলোচনায় আসেন। সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে থাকাকালে তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ছয়টি মামলা হয়। ওই বছরের ১৬ অক্টোবর ভারতে পালানোর সময় বেনাপোল সীমান্তে আটক হয়ে তিনি কারাগারে যান। প্রায় এক বছর কারাগারে থাকার পর চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন পান তিনি। তবে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় ফের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সর্বশেষ ২৯ সেপ্টেম্বর শেরপুর আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর কারামুক্ত হন তিনি এবং এলাকা ছেড়ে চলে যান।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবাদ সম্মেলন করে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবারের এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।