চিকিৎসক শূন্য কুয়াকাটা ২০ শয্যার হাসপাতাল, সেবা কার্যত বন্ধ
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ২০ শয্যার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট চরমে পৌঁছেছে। সবশেষ কর্মরত থাকা একমাত্র চিকিৎসক ডা. সুপ্রিয়া দাস গত ১৭ সেপ্টেম্বর বদলিজনিত কারণে অন্যত্র যোগদান করায় বর্তমানে হাসপাতালটি সম্পূর্ণরূপে চিকিৎসকশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
বর্তমানে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ কোনোভাবে পরিচালনা করছেন একজন উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার, যা রোগীদের জন্য মোটেও পর্যাপ্ত নয়। এতে কুয়াকাটায় আগত হাজারো পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
হাসপাতালটিতে মোট ছয়জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও (একজন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, একজন মেডিক্যাল অফিসার ও চারজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট) বর্তমানে কেউই কর্মরত নেই। মোট ১৭টি জনবল পদের মধ্যে ১২টি পদ শূন্য, এবং অনেক কর্মী প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত। বর্তমানে শুধু পাঁচজন সিনিয়র স্টাফ নার্স কর্মরত রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১ জুলাই আফরোজা আকবর নামে প্রথম একজন চিকিৎসক নিয়োগের মাধ্যমে হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিনি কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলেও কখনো একজন, কখনো দুইজন চিকিৎসক দিয়ে নামমাত্র সেবা চালু ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ জনবল নিয়োগ না হওয়ায় কুয়াকাটা পৌরসভা ও পার্শ্ববর্তী মহিপুর ও লতাচাপলী ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
‘আমরা কুয়াকাটাবাসী’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাফিজুর রহমান আকাশ বলেন, ‘কুয়াকাটা একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। তাই পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালটিতে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক পদায়ন করে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা প্রয়োজন।‘
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘কুয়াকাটাসহ উপজেলায় চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আপাতত একজন উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসারকে জরুরি ও বহির্বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।‘