দুর্নীতি যত কমবে, সমাজে বৈষম্য তত কমবে: দুদক চেয়ারম্যান
মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১৭৫তম গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘দুর্নীতি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে, দুর্নীতি যত কমবে, সমাজে বৈষম্য তত কমবে।’
রবিবার (১৮ মে) মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় এ গণশুনানির আয়োজন করে দুদক। ‘আসুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
গণশুনানির প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বলা হয়, সারা দেশে দুর্নীতি দমনে দুদকের অফিস, জনবল বাড়াতে হবে। এবিষয়ে আমি বলবো, সমাজে দুর্নীতি যত কমবে, দুদকের প্রয়োজনীয়তাও তত কমে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বৈধ সেবা পেতে আমরা জেনে-বুঝেই ঘুষ দিই—এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। মৌলভীবাজারকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সেবা প্রদান ও গ্রহণ উভয় পক্ষকেই আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, মৌলভীবাজার ভবিষ্যতে দুর্নীতিমুক্ত জেলার তালিকায় অগ্রগণ্য অবস্থান করবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ। তিনি বলেন, ‘১দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে এই যুদ্ধে জয়লাভ শুধুমাত্র দুদকের পক্ষে সম্ভব নয়—এজন্য দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ বাধ্য হয়ে ঘুষ দেয়। কিন্তু সবাই মিলে সচেতন হলে এবং নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলে দুর্নীতি দমন সম্ভব। ব্যক্তি হিসেবে কেউ ঘুষ না দিলে, প্রতিবাদ করলে, চিৎকার করে আশপাশের মানুষকে ডাকলে, ভিডিও করলে—প্রতিষ্ঠানিক দুর্নীতিও কমবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আকতার হোসেন, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, হবিগঞ্জ-এর উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়াঁ।
গণশুনানিতে ১৮টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে আসা মোট ৫৮টি অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি অনুসন্ধানে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ১১টি অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয়। বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়েও প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়।