কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষকদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি
বহিরাগত কর্তৃক ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া এবং শিক্ষকদের হাত-পা ভেঙে গেটে ঝুলিয়ে রাখার হুমকির প্রতিবাদে কলেজের অধ্যক্ষ আমরণ অনশনে বসেছেন। এ সময় তার সঙ্গে কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারী অনশনে অংশ নেন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বহিরাগতদের বিচার ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে তারা আমরণ অনশনে বসেন। এ ছাড়া দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান। তবে পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া এসে বিচারের আশ্বাস দিলে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন তারা।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় কেবি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান জানান, বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম দেখবে বলে উপাচার্য তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার মান ও নান্দনিক পরিবেশের কারণে ময়মনসিংহের মধ্যে এটি অন্যতম সেরা কলেজ। আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্য দেখিয়ে আসছে। কিন্তু কলেজ প্রাঙ্গণে বহিরাগতদের বিচরণ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কিছু দুষ্কৃতকারী তা অমান্য করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। তাদের কথা হচ্ছে তারা যা চাই তাই করতে দিতে হবে। তাদের কারণে কলেজের সম্পদ নষ্ট হচ্ছে এবং চুরিও বাড়ছে। কলেজের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা যখন এদের বাধা দিচ্ছি, তখন উল্টো আমাদের নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তারা বলছে, কলেজে বোমা মেরে উড়িয়ে দেবে এবং শিক্ষকদের হাত-পা ভেঙে গাছে ঝুলিয়ে রাখবে।’
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু সমাধানের কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরণ অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছি।
শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি বলেন, ‘কলেজ প্রাঙ্গণে বহিরাগতদের উৎপাত, শিক্ষকদের হুমকি এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার কারণে আমরা অধ্যক্ষের সঙ্গে আমরণ অনশনে বসেছি। ময়মনসিংহের অন্যতম সেরা একটি কলেজের নিরাপত্তা এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। দিন যত যাচ্ছে, তাদের আক্রমণাত্মক আচরণ আরও বাড়ছে। তারা কলেজ প্রশাসনের নিয়ম-কানুন মানতে চায় না এবং যা ইচ্ছা তাই করতে চায়।’
রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতকারীকে কলেজের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়ায় আমাদের নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। এমনকি শিক্ষক ও কর্মচারীদের হাত-পা ভেঙ্গে গেটে ঝুলিয়ে রাখার হুমকি দিচ্ছে। তবে শিক্ষক এবং কর্মচারী সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, কলেজ প্রশাসন এবং অভিযুক্ত কাকলী সংঘের সদস্যদের নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। তারা মূলত অনলাইনে লেখালেখি করেছে। সামনাসামনি কোনো শিক্ষককে কিছু বলেনি। আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’