২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৯
পরীক্ষার জন্য ভালো নোট তৈরির কৌশল
পরীক্ষায় ভালো নম্বর তোলার জন্য ভালো নোট করা গুরুত্বপূর্ণ। পাঠ্যবই পড়ার পাশাপাশি ভালো নোট তৈরি করা খুবই জরুরি। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য নোট করার কাজটি শিক্ষার্থীর নিজেকেই করতে হবে। এমনকি নোট করা থাকলে পরীক্ষার আগের রাতেও পড়তে সুবিধা হয়। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো খুব সহজেই একনজর চোখ বুলিয়ে নেওয়া যায়। ভালো নোট তৈরির বেশ কিছু সহজ কৌশল রয়েছে। ক্লাসে ও বাসায় ভালো নোট করতে চাইলে এই কৌশলগুলো জানা জরুরি।
ক্লাসে নোট করার কৌশল
- ক্লাসে সামনের সারির বেঞ্চিতে বসা উত্তম। সামনের সারিতে বসলে পড়া বোঝার পাশাপাশি নোট নিতেও সুবিধা হয়। কেননা এতে শিক্ষকের কথা পরিষ্কার শোনা যায়। সাথে মনোযোগ ধরে রাখা যায়। ফলে ক্লাস নোট লিখতেও সুবিধা হয়।
- প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা নোটখাতা ব্যবহার করা উত্তম। সুন্দর ও পরিষ্কারভাবে নোট তৈরির প্রস্তুতি থাকতে হবে। সব বিষয় একই নোট খাতাই তোলা যাবে না। এতে পরবর্তীতে নিজেরই বুঝতে সমস্যা হবে।
- প্রতিটি নোটের পাশে ওই দিনের তারিখ, বার ও সময় লিখতে হবে। নোট লিখতে হবে পরিষ্কার কাগজে।
- ক্লাসে নোট করার সঙ্গে শিক্ষকের লেকচারও মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তবে শিক্ষক সব কথাই লেখার প্রয়োজন নেই। শুধু মূল কথাগুলো সংক্ষেপ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লিখলেই হয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা মূল আইডিয়া আন্ডারলাইন করা উত্তম।
- প্রতিটি লাইনের ফাঁকে যথেষ্ট জায়গা রেখে লেখা উত্তম। ফলে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য সহজেই যোগ করা যায়। বামদিকে এক ইঞ্চি খালি জায়গা রাখতে হবে। এতে দ্রুত লিখতে গিয়ে হাতের লেখা অসুন্দর হলেও পরিষ্কার ও কাটাকাটি মুক্ত হতে হবে।
- নোট তৈরিতে যত সম্ভব ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার করা। বিভিন্ন সিম্বল ব্যবহার করলে নোট তুলনামূলক সহজ হবে। যেমন- Cf (compare); eg (for example); W/O (without), W/(with) ইত্যাদি।
- ক্লাস শেষ হবার পরপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নোটগুলো পড়ে নিতে হবে। যদি কোনো বিষয়ে ভুল থাকে তবে তা শিক্ষকের নিকট থেকে বুঝে নিতে হবে।
- ক্লাস মিস না করা করা যাবে না। একজন ভালো শিক্ষক সবসময়ই চেষ্টা করেন পাঠ্যবইতে যা আছে তার চেয়ে বেশি জানাতে। তাই নিয়মিত ক্লাসে যেতে হবে এবং শিক্ষকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।
আরও পড়ুন : গুগলে দ্রুত তথ্য খুঁজে পাওয়ার কৌশল - The Daily Campus
বাসায় নোট তৈরির কৌশল
- প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহ করে রাখতে হবে। বাসায় পড়ার সময় পাঠ্যবই থেকে নোট তৈরি করতে হবে। এর জন্য একাধিক ভালো বই সংগ্রহে রাখতে হবে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে লিখে রাখতে হবে।
- নোটের লিখতে হবে নিজস্ব কিংবা বইয়ের ভাষায়। বইয়ের ভাষায় নোট করাটাই উত্তম ও সহজসাধ্য হবে। বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো হুবহু তুলে নেওয়া যেতে পারে কিংবা নিজের ভাষায় সহজ করে লেখা যেতে পারে। নোট করার আসল উদ্দেশ্য হতে হবে একটি সর্বোত্তম প্রশ্নোত্তর তৈরি করা।
- ক্লাস নোটের মতো বাড়িতেও বিষয়ভিত্তিক নোট খাতা আলাদা করে লিখতে হবে। পাঠ্যবইয়ের নোট থেকে ক্লাসনোট আলাদা করে রাখতে হবে। ক্লাস নোট বাসায় মূল নোট তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- যে বিষয়ে নোট করবে সেই অধ্যায়টি সতর্কতার সাথে পড়তে হবে। ভূমিকা, হেডিং এবং বিষয় সম্পর্কে যদি কোনো সামারি থাকে তা বাদ দেওয়া যাবে না।
- প্যারাগ্রাফ বা পয়েন্টভিত্তিক নোট হবে ছোট ছোট প্যারা বা পয়েন্টভিত্তিক। পদ্ধতিতে পরীক্ষার খাতায় লিখলে তা শিক্ষকের জন্যও বোধগম্য হয়। তাই প্রবন্ধকারের লেখার তুলনায় প্যারাভিত্তিক বা পয়েন্টভিত্তিক লেখাই উত্তম।
- নোটের ভাষা হতে হবে সহজ ও সাবলীল, যেন উত্তর বুঝতে অসুবিধে না হয়। তাই যতদূর সম্ভব সহজ-সরল শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার করতে হবে।
- নোট তৈরির সময় যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে নোট তৈরি করতে হবে। যে কোনো তথ্য ভুল লেখা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
- বাসায় নোট করার সময় ক্লাসনোটের সহায়তা নিতে হবে। ক্লাসনোটে এমন কিছু সংগ্রহ হয় যা অনেক সময় পাঠ্যবইয়ে থাকে না। আর এ তথ্যগুলো নোটে সংযোজিত হলে একটি ব্যতিক্রমী ও ভালো মানের নোট হয়।
কোনো ছাত্রছাত্রীর পক্ষেই পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি লাইন হুবহু মুখস্থ করা সম্ভব নয়। নোট করার মাধ্যমে সেটা সংক্ষেপে সাজান যায়। ভালো নোট পরীক্ষার সময় ভালো নম্বর পেতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। তাই ভালো মানের নোট তৈরির কৌশল শিখে নিতে হবে।