মগজ বলছে ব্রাজিল, হৃদয়ের চাওয়া মেসি

কাতার বিশ্বকাপ
কাতার বিশ্বকাপ  © সংগৃহীত

কে জিতবে বিশ্বকাপ? ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ যখন কড়া নাড়ছে দরজায়, তখন সারা বিশ্বের শত কোটি ফুটবলভক্তের মনের কোণে এই প্রশ্নটাও তো উঁকি দেবেই৷

উত্তরটা অবশ্য দেয়া খুব কঠিন৷ সময়ের রাত পেরিয়ে ভবিষ্যৎ তো আর দেখে আসার উপায় নেই! তবে একটা অনুমান করা যেতে পারে। হাতের কাছে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে৷ অংশগ্রহণকারী দলগুলোর শক্তি-দুর্বলতা-সাম্প্রতিক ফর্ম আর সেই সঙ্গে টুর্নামেন্টের ফরম্যাট, গ্রুপিংয়ে এই সবকিছু বিবেচনায় রেখে করতে হয় এই অনুমান৷

কিন্তু কাগজে-কলমে যাদের শক্তিশালী বিবেচনা করা হয়, বাস্তবে তারাই যে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়, এমন তো নয়! তাই সব হিসেব-নিকেশ উল্টে যেতেই পারে যে কোনো সময়৷

এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে সব মিলিয়ে মোট ৩২টি দল৷ ফরম্যাট অনুসারে প্রথম রাউন্ডে এই ৩২টি দলকে ভাগ করা হয়েছে চার দলের আটটি গ্রুপে৷ রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে গ্রুপের প্রতিটি দল পরস্পরের সঙ্গে একবার করে মুখোমুখি হবে; তারপর প্রত্যেক গ্রুপের সেরা দুটি দল উঠবে দ্বিতীয় রাউন্ডে৷ দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে আবার খেলা বাঁচা-মরার, নক-আউট পদ্ধতিতে ষোলো থেকে আট, আট থেকে চার এবং শেষচারের লড়াই পেরিয়ে দুটি দল খেলবে ফাইনালে৷

কারা হবে সেই দুটি দল? ফিফার বর্তমান ব়্যাঙ্কিং অনুসারে সেই দুটি দল হওয়ার কথা ব্রাজিল আর বেলজিয়াম৷ কারণ, ব়্যাঙ্কিংয়ের এক আর দুই নম্বরে আছে এই দুটি দল৷ এই হিসেব অনুসারে পরের দুটি দল হলো আর্জেন্টিনা আর ফ্রান্স৷ কিন্তু ব়্যাঙ্কিংয়ের এই সেরা চার দলের মধ্যেই কি সেমিফাইনালের লড়াই হওয়া সম্ভব?

ফরম্যাট অনুযায়ী খুবই সম্ভব৷ ব্রাজিল, বেলজিয়াম, আর্জেন্টিনা আর ফ্রান্স নিজেদের গ্রুপে সেরা হতে পারলে, আর তারপর নক-আউটে কোথাও পা না ফসকালে আসলে ফাইনাল নয়, সেমিফাইনালেই দেখা হয়ে যাওয়ার কথা ব়্যাঙ্কিংয়ের এক আর তিনে থাকা ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার৷

আর অন্য সেমিফাইনালে দেখা হওয়ার কথা দুই ও চারে থাকা বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের৷ তারপর, সাবেক অস্ট্রেলিয়ান সুপারস্টার টিম ক্যাহিল যেমন ভাবছেন, ফাইনালে দেখা হবে ব়্যাঙ্কিংয়ের সেরা দুই দল ব্রাজিল ও বেলজিয়ামের! আর ব়্যাঙ্কিং-ই যদি শেষ কথা হয়, তাহলে তো এবার ব্রাজিলিয়ানদের ‘হেক্সা মিশন’ সফল হওয়ার কথা অবশেষে৷ কুড়ি বছর আগে এশিয়ার মাটিতে হওয়া সর্বশেষ বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম শিরোপাটা জিতেছিল সেলেসাওরা, এবার সেই এশিয়াতেই হাতছানি মাঝের দুই দশকের অপেক্ষা শেষ হওয়ার৷

দারুণ ফর্মে থাকা নেইমার-জেসুসদের দলের মিশনটা অবশ্য খুব সহজ সরল নয়৷ জি গ্রুপে তাদের তিনসঙ্গী সার্বিয়া, ক্যামেরুন আর সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ব়্যাঙ্কিংয়ে সবার উপরে থাকা সুইজারল্যান্ডেরই অবস্থান ১৫তে৷ সে হিসেবে গ্রুপসেরা হওয়ার পথে প্রবল কোনো বাধা নেই৷ কিন্তু ঝামেলার শুরু দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই৷ সেখানে তাদের দেখা হওয়ার কথা এইচ গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দলের৷

সেখানে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের সঙ্গে আছে উরুগুয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া আর ঘানা৷ পর্তুগাল যদি গ্রুপসেরা হতে পারে তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ কোরিয়া অথবা উরুগুয়ে৷ ব়্যাঙ্কিংয়ে উরুগুয়ের চেয়ে একটু পিছিয়ে থাকলেও খেলাটা এশিয়ায় বলে কোরিয়ানদের একটু এগিয়ে রাখতে হচ্ছে৷ কুড়ি বছর আগে নিজেদের মাঠে কিন্তু ইতালি-স্পেনের মতো দলকে পিছনে ফেলেছিল তারা৷

টটেনহ্যামের স্ট্রাইকার সন হিউং-মিন আর নাপোলির ডিফেন্ডার কিম মিন-জায়ের দুর্দান্ত ফর্ম পরীক্ষা নিতে পারে থিয়াগো সিলভা-নেইমারদেরও৷ সেই পরীক্ষায় পাস করলে কোয়ার্টার ফাইনালে আবার দেখা হয়ে যেতে পারে জার্মানির সঙ্গে! আট বছর আগে নিজেদের মাঠে সেমিফাইনালে যাদের সামনে পড়ে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লজ্জার মুখে পড়তে হয়েছিল ব্রাজিলিয়ানদের৷

সে জন্য অবশ্য জার্মানিকেও পেরিয়ে আসতে হবে অনেকগুলো হার্ডল৷ এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে কঠিন গ্রুপগুলোর একটি, ই গ্রুপে জার্মানদের সঙ্গী স্পেন, জাপান আর কোস্টারিকা৷ ব়্যাঙ্কিংয়ের তাদের চেয়ে বরং এগিয়ে স্পেন৷ সাম্প্রতিক ফর্মও খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়, সবার আগে কাতারের টিকেট নিশ্চিত করলেও সম্প্রতি ইউরোপিয়ান নেশন্স লিগে নিজেদেও নিজেদের গ্রুপে তৃতীয় হয়েছে তারা, পেছনে পড়েছে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট না পাওয়া ইটালি আর হাঙ্গেরির৷

বিশ্বকাপে জার্মানদের দুর্দান্ত রেকর্ড বিবেচনায় তাদেরকেই সম্ভাব্য গ্রুপসেরা ধরতে হচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাউন্ডে তাদের দেখা হতে পারে এফ গ্রুপের সম্ভাব্য রানার্সআপ, গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার৷ গতবারের গোল্ডেন বলজয়ী লুকা মদ্রিচ আছেন এবারো, তবে ৩৭ বছর বয়সি রিয়াল মাদ্রিদ তারকার মতোই তাদের সেরা খেলোয়াড়দের বেশিরভাগই ক্যারিয়ারের সেরা সময়টাকে পেছনে ফেলে এসেছেন৷ তাই নিজেদের গ্রুপে বেলজিয়ামের পিছনে রাখতে হচ্ছে তাদের, দ্বিতীয় রাউন্ডেও জার্মানদের সঙ্গে পেরে ওঠার সম্ভাবনা কম৷

তবে ই গ্রুপের লড়াইয়ে স্পেন যদি তাদের ব়্যাঙ্কিংয়ের যথার্থতা প্রমাণ করতে পারে, সে সেক্ষেত্রে কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ হতে পারে ২০১০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরাও৷

সবকিছু যদি এই হিসেব অনুসারে চলে, তাহলে সেমিফাইনালে ব্রাজিলের সঙ্গী হবে আর্জেন্টিনা৷ প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের দুই মহাতারকা নেইমার ও মেসির লড়াইয়ে কে জিতবে, বলা মুশকিল৷ এ মুহূর্তে দুজনই আছেন দুর্দান্ত ফর্মে, দল হিসেবেও বরাবরের মতোই পিছিয়ে নেই কেউ কারো চেয়ে৷ তবে ব্রাজিলের মতোই আর্জেন্টিনার সেমিফাইনালে ওঠার পথটাও কাঁটা-বিছানো৷

সেখানে সবচেয়ে বড় বাধার নাম নেদারল্যান্ডস৷ সি গ্রুপে পোল্যান্ড-মেক্সিকো-সৌদি আরবের সঙ্গে লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা যদি গ্রুপসেরা হয়, তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে তাদের সঙ্গে দেখা হবে ডি গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দলের৷ ওই গ্রুপে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সঙ্গে আছে বিপজ্জনক ডেনমার্ক, তিউনিসিয়া আর অস্ট্রেলিয়া৷

সম্প্রতি ইউরোপিয়ান নেশনস লিগে দুইবারের দেখায় ডেনিশদের হারাতে পারেনি ফ্রান্স, এক ম্যাচে ড্র করে অন্যটিতে হেরেছে৷ কাতারে যদি তার পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে তো দ্বিতীয় রাউন্ডেই আরেক ক্লাবসতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পের মুখোমুখি পড়ে যেতে হতে পারে মেসির৷

আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনা থেকে ৯০০ কেজি মাংস নিয়ে কাতারে মেসিরা

সেই অঘটন না ঘটলেও প্রতিপক্ষ হিসেবে ডেনমার্ক যথেষ্ট শক্তিশালী৷ আর সেই বাধা টপকাতে পারলে কোয়ার্টার ফাইনালে মেসিদের লড়তে হতে পারে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে৷ এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ডাচদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ গ্যারেথ বেলের ওয়েলশ৷ সে বাধা টপকে সহজেই শেষ আটের টিকেট পাওয়ার কথা বিশ্ব ব়্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বরে থাকা দলটির৷

নক-আউট গ্রুপিংয়ের অন্য অর্ধ থেকে ফাইনালে উঠতে হলে বেলজিয়ামকেও কিন্তু পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ৷ গ্রুপপর্ব থেকেই শুরু, কারণ এফ গ্রুপে তাদের সঙ্গী হিসেবে আছে লুকা মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া৷ তবে সেই ১৯৮৬ সালের পর গত আসরেই প্রথম সেমিফাইনালে ওঠা বেলজিয়াম তাদের সেরা সময়টাই পার করছে এখন৷

গোলবারের নিচে বিশ্বসেরা থিবো কোর্তোয়া, রক্ষণদুর্গের প্রহরী হিসেবে টবি অল্ডারওয়েইল্ড ও ইয়ান ভেট্রোগেনরা তো আছেনই; কেভিন ডি ব্রুইনার নেতৃত্বে গড়া মধ্যমাঠও যথেষ্ট কার্যকর তবে বেলজিয়ামের সবচেয়ে বড় শক্তি সম্ভবত তাদের আক্রমণ, যেখানে অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ডের সঙ্গী রোমেলু লুকাকু আর ড্রিয়েস মের্টেনস৷ এই দল নিয়ে তারা অন্তত গতবারের সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে না পারলে সেটাকে অঘটনই বলতে হবে৷

তবে প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ সেরা হতে পারলেও স্বস্তি নেই তাদের, কারণ দ্বিতীয় রাউন্ডের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ স্পেন অথবা জার্মানি! আর কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হতে পারে পর্তুগালের সঙ্গে৷ রোনালদো ফর্মে না থাকলেও পর্তুগালের দলে এখন পারফরমারের অভাব নেই৷ ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর পিএসজির মতো দলেই আছেন আরো সাতজন৷ ঘানা-উরুগুয়ে-দক্ষিণ কোরিয়াকে পেছনে ফেলে তাদেও গ্রুপসেরা হওয়াই উচিৎ৷ সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাউন্ডে তাদের পড়তে হবে ব্রাজিলের গ্রুপসঙ্গী সার্বিয়া অথবা সুইজারল্যান্ডের৷

কিন্তু সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের সঙ্গী হবে কারা? সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ফ্রান্স অথবা ইংল্যান্ড৷ গত বিশ্বকাপের এই দুই সেমিফাইনালিস্টের সাম্প্রতিক ফর্ম অতোটা ভালো নয়৷ উয়েফা নেশন্স লিগে নিজেদের গ্রুপে ক্রোয়েশিয়া-ডেনমার্কের পেছনে থেকে তৃতীয় হয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা, ইংল্যান্ড তা-ও পারেনি৷ ইটালি-জার্মানি-হাঙ্গেরিকে সঙ্গে নিয়ে গড়া মৃত্যুকুপে পড়ে তারা গ্রপপর্ব শেষ করেছে সবার নিচে থেকে, যে কারণে নেমে যেতে হয়েছে বি লিগে৷ ফ্রান্সের জন্য তো গ্রুপপর্বটাও একটু কঠিন, কারণ সেখানে তাদের সঙ্গী ডেনমার্ক৷ এবং অবশ্য একটা দুঃসহ স্মৃতি।

২০০২ সালে এশিয়ার সর্বশেষ বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে এসেছিল লা ব্লুজ; কিন্তু সেবার ভরাডুবি হয়েছিল লা ব্লুজের৷ এই ডেনমার্কের কাছেই শেষ গ্রুপম্যাচে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল প্রথম রাউন্ড থেকে৷ তারপর থেকে প্রতি বিশ্বকাপেই আগের আসরের চ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিয়েছে গ্রুপপর্ব থেকে৷ সেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিশাপ কাটাতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ডে এমবাপ্পে-বেনজেমা-দেম্বেলেদের সঙ্গে দেখা হতে পারে আর্জেন্টিনার গ্রুপের দ্বিতীয় দল লেফানডফস্কির পোল্যান্ড অথবা মেক্সিকোর৷

সে তুলনায় বি গ্রুপে ইংল্যান্ডের লড়াইটা সহজ৷ সেখানে তাদের সঙ্গী ওয়েলশ, ইরান আর যুক্তরাষ্ট্র৷ গ্রুপসেরা হতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ডে দেখা হবে এ গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল, ইকুয়েডর অথবা সেনেগালের৷  কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পথটা সহজ হলেও সেখানে ফ্রান্সের মুখোমুখি দারুণ একটা লড়াই হতে থ্রি লায়ন্সদের৷ গত বিশ্বকাপে তারুণ্যের ঝলক দেখিয়ে শেষ চারে পৌঁছানো দলটির লাইন-আপে খুব বেশি বদল হয়নি, তবে সেরা খেলোয়াড়রা তেমন ফর্মে না থাকায় এমবাপ্পে-বেনজেমাদের সঙ্গে লড়াইয়ে পিছিয়েই রাখতে হচ্ছে তাদের৷

সেমিফাইনালে তাই র‌্যাংকিংয়ের সেরা চার দলের লড়াই হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা৷ কিন্তু শেষ চারের লড়াইয়ে শেষ হাসি কাদের হবে, বলা আসলেই মুশকিল৷ যুক্তি বলছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দেখা হলে জেতার কথা ব্রাজিলের৷ কিন্তু, সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে অবিসম্বাদিত স্বীকৃতি প্রায় পেয়েই যাওয়া মেসি-র কখনো বিশ্বকাপ না জেতার আক্ষেপটা কি তাহলে থেকেই যাবে? শুধু মেসির জন্য হলেও তো এই লড়াইটা আলবিসেলেস্তেদেরই জেতা উচিৎ; যেমন কওে গত কোপা আমেরিকায় মেসিকে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দিয়েছে তারা৷

অন্য সেমিফাইনালে আবার কাগজে-কলমে বেলজিয়ামকে এগিয়ে রাখতে হয়৷ কিন্তু কোর্তোয়া-ডি ব্রোইনে-হ্যাজার্ডদের সোনালি প্রজন্মকে মনে রেখেও যে লা ব্লুজেদের পিছিয়ে রাখার উপায় নেই! বরং গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পুনরাবৃত্তি করে দিদিয়ের দেশমের দল জিতে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না৷ তাহলে তো আবার ফাইনালে হতে পারে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি৷

সম্ভাবনাটাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না৷ আসলে, ব়্যাঙ্কিং সেরা চার দলের যেকোনোটিরই বিশ্বকাপ জয়ের শক্তি আছে, সম্ভাবনাও আছে৷ তাছাড়া জার্মানিকেই বা বাদ দিই কোন সাহসে! শেষ চারের লড়াইয়ে ব্রাজিলকে তাদেরই ঘরের মাঠে সাত গোল দিয়েছিল যারা, এবার শেষ আটের দেখায় তারা যদি সেই ম্যাজিক ফিরিয়ে আনতে পারে, তাহলে সেমিফাইনালের লাইন-আপটাও বদলে যেতেই পারে৷ এমনকি নিজেদের গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে অন্য পথেও উঠে আসতে পারে সবচেয়ে বেশিবার সেমিফাইনাল খেলা দলটি, সেক্ষেত্রে তাদের সাফল্যের বলি হতে হবে বেলজিয়ামকে৷

কিন্তু তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণ যা-ই বলুক, শেষ পর্যন্ত হৃদয় বলছে এই বিশ্বকাপটা মেসির হোক৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর ফর্ম হারানো নিজেদের দ্বৈরথে বিজয়ীর আসনে বসিয়েই দিয়েছে তাকে; জাতীয় দলের হয়ে একটা শিরোপাও এরই মধ্যে যোগ হয়েছে নামের পাশে৷ বাকি আছে কেবল বিশ্বকাপের শিরোপা; সেটা না পেয়েই তার ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে গেলে যে আক্ষেপটা রয়েই যাবে!

সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা


সর্বশেষ সংবাদ