আগুন জ্বলছে বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবনে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ১২:২৭ PM , আপডেট: ০৫ মে ২০২৪, ১২:৩০ PM
বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার আগুন লাগার বিষয়টি নজরে আসার পর দুপুর থেকেই বন বিভাগ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও বাসিন্দারা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও পর্যাপ্ত পানি স্বল্পতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রবিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত আগুন জ্বলছিল।
আগুন লাগা এলাকায় মূলত বলা, সুন্দরী, বাইন, গেওয়া, জিন, সিংড়াসহ বিভিন্ন ধরনের লতাগুল্মজাতীয় গাছ বেশি। এরই মধ্যে বেশ কিছু বলা বন পুড়ে গেছে। আগুন যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, এ জন্য স্থানীয় লোকজন নিয়ে বন বিভাগ কিছুটা পাতার স্তুপ সরালেও বনের গভীর ফায়ার লাইন কাটতে পারেনি।
সুন্দরবন-সংলগ্ন নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু তাহের মিনা জানান, শনিবার সকালে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়ার টহল ফাড়ির খাড়িরছিলা ও লতিফের ছিলা এলাকার বনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। বনের দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আগুন জ্বলছে বেশ কিছু জায়গার লতাপাতা গুল্ম পড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে বন কর্মীরা স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে কী কারণে আগুন লেগেছে বা কি পরিমাণ জায়গা আগুনে পুড়ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩ মে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লেগেছিল। এ নিয়ে গত ২৩ বছরে বাংলাদেশের ফুসফুস খ্যাত সুন্দরবনের ভোলা ও মরা ভোলা নদীসংলগ্ন ওই এলাকায় অন্তত ২৫ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
এদিকে, পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া অংশে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে একত্রে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও গ্রামবাসী। রোববার (৫ মে) সকাল ৮টা থেকে যৌথভাবে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে তারা। তবে এতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, রোববার সকাল ৮টা থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট সুন্দরবনের ভোলা নদী থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে। যে সব স্থানে আগুনের ধোঁয়া ও কুণ্ডলী দেখছে সেখানে পানি ছেটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি বনবিভাগ ও গ্রামবাসী আগুন নেভাতে কাজ করছে। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে পানি আনতে হচ্ছে। আগুন পুরোপুরি না নির্বাপণ পর্যন্ত তারা কাজ করবে।
ঘটনা তদন্তে কমিটি
আগুন লাগার কারণ, কী পরিমাণ এলাকায় আগুন লেগেছে ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুজন সদস্য হলেন জিউধারা স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।