ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধে বিপাকে ইউরোপগামী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী-শ্রমিকরা

ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধে বিপাকে ইউরোপগামী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী-শ্রমিকরা
ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধে বিপাকে ইউরোপগামী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী-শ্রমিকরা  © ফাইল ছবি

বিগত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম স্থগিত করে ভারত। এতে দেশটিতে যেতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশিদের। বর্তমানে ইউরোপের অনেক দেশেরই ভিসা সেন্টার নেই বাংলাদেশে। ফলে দেশের ভিসা প্রাপ্তি এবং অন্যান্য সেবা গ্রহণ করতে হয় ভারতে গিয়ে। 

কিন্তু ভারতের ভিসা সেন্টার বন্ধ থাকার কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ইউরোপগামী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং কর্মপ্রত্যাশীদের। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ এর মতো বাংলাদেশি এ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার এবং ওয়ার্ক পারমিট পাচ্ছেন না প্রার্থীরা।

ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন—যেহেতু ইউরোপের অনেক দেশে বাংলাদেশে দূতাবাস নেই, তাই তারা ভিসা ও অন্যান্য সেবার জন্য দিল্লির দূতাবাসের ওপর নির্ভরশীল। ভারত বর্তমানে ভিসা ইস্যু না করায়, তারা পড়াশোনা বা কাজের জন্য এই দেশগুলিতে ভ্রমণ করতে অক্ষম, এবং ভিসা ফি এবং টিউশন পেমেন্টের জন্য ফেরত পেতেও লড়াই করতে হচ্ছে তাদের।

আরও পড়ুন: 'যোগ্যতা কাঠামো'য় বাঁধা বিদেশে উচ্চশিক্ষা

বর্তমানে পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ার মতো ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অফার লেটার রয়েছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের হাতে৷ বিপরীতে ঢাকায় এসব দেশের দূতাবাস নেই।

তানজিম হাসান তুষার, একজন শিক্ষার্থী যিনি রোমানিয়ার টারগোভিতে ভ্যালাহিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তিনি তার অভিজ্ঞতায় জানিয়েছেন, আমরা ৮০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী, যারা রোমানিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পাওয়ার পর ভিসার জন্য আবেদন করেছি। তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এক বছরের টিউশন ফি বাবদ ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা জমা দিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট।

এই শিক্ষার্থী জানান, ভিসার জন্য আবেদন করার জন্য আমাদের দিল্লিতে রোমানিয়ান দূতাবাসে একটি ভাইভাতে যোগ দিতে হবে। যদি আমরা ভাইভাতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হই, আমরা ভিসা পাব না, এবং ভিসা হলে টিউশন ফি ফেরত দেওয়া হবে না। সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়া হয় না।

আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের স্কুলগুলোতে সবচেয়ে ভালো করছে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা

তুষার বলেন, জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেয়েছেন। অনেকে জুলাই মাসের শেষের দিকে তাদের ভিসার আবেদন শুরু করে, ভাইভা তারিখ আগস্টে নির্ধারিত ছিল। তবে, ভারতের ডাবল এন্ট্রি ভিসার আবেদন স্থগিত করায়, উচ্চ শিক্ষার জন্য আমাদের সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, বিগত ৭ আগস্ট ভারতীয় ভিসা সেন্টারের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি বার্তায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে সমস্ত ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা জানানো হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে। 

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে ছাত্র ও শ্রমিকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা আমাদের সেরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সমাধানটি জটিল।

আরও পড়ুন: দেশে ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে

এর আগে ভিসা সংকট সমাধানের দাবিতে গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও শ্রমিকরা। তারা বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসার আবেদনগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পূর্ণরূপে চালু করার আহ্বান জানিয়েছে এবং বৈধ কারণ ছাড়া কোনো বাংলাদেশি ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, ভারতীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন। তারাও ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে আরও যত্নের জন্য ভ্রমণ করতে পারছেন না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence