সীমান্তে নেতাই নদে সেতুর অভাবে জনদুর্ভোগ
- ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৫ PM , আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৫ PM

ভারত থেকে নেমে আসা নেতাই নদের ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি পারাপার হচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া ২০০ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় অটো, রিকশা, সিএনজি ও মোটরসাইকেল। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় সড়কের উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই এলাকার মানুষ। স্থানীয় লোকজন দ্রুত নদের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নে ভূঁইয়াপাড়া গ্রামের নেতাই নদে এলাকার চিত্র ঠিক এমনই।
বর্ডার রোড নামের সীমান্ত সড়কটি হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিলেও নেতাই নদের ওপর একটি সেতুর জন্য সীমান্ত সড়কের পথচলা যেন থমকে গেছে। সীমান্ত সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও যানবাহনের চলাচল। ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় এসেই গতিপথ পাল্টাতে হয়। সেতুর অভাবে ঘোষগাঁও বাজার হয়ে ধোবাউড়া সদরের মধ্য দিয়ে ২০ কিলোমিটার ঘুরে চারুয়াপাড়া এলাকার সীমান্ত সড়কে উঠতে হয়। একইভাবে ওই এলাকার মানুষের এ পাড়ে আসতে হয়। ফলে সময় লাগে ২ ঘণ্টার বেশি।
নদের দুই পাশে দূর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও হালুয়াঘাট উপজেলা গাবরাখালী গারো পাহাড় পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসব এলাকায় যাতায়াত করেন।
আরও পড়ুন: কুবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সমাপ্ত, প্রশ্নপত্র দেখুন এখানে
ভূঁইয়াপাড়া নেতাই নদীর ওপর ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকো দিলেও তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নদ পারাপার হচ্ছেন হাজারো মানুষ ও ছোট ছোট যানবাহন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলের সময় মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। সাঁকোটি সারা বছরের জন্য স্থায়ী নয়। নভেম্বর থেকে এপ্রিলের শেষভাগ পর্যন্ত একাধিকবার সংস্কার করার পর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে সাকোঁটি নদের পানিতে ভেসে যায়। এরপর শুরু হয় আরেক সংগ্রাম। যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় রোগী, শিক্ষার্থী, কৃষক, পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের এ সড়কটির ৪২ কিলোমিটার পড়েছে ময়মনসিংহ অংশে।
২০২৩ সালে এ অংশের রোডের নির্মাণকাজ শেষ হয়। কাজটি শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই সময় এখানে সেতু নির্মাণের কথা থাকলেও সেটি আর করা হয়নি। ফলে সড়কের উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই এলাকার লাখো মানুষ।
স্থানীয় কুদ্দুস আলী ফকির বলেন, সীমান্ত সড়কটি এলাকার মানুষের কাছে আর্শীবাদ হয়ে এসেছিল। শুধু সেতুর অভাবে ভাগ হয়ে গেছে নদের দুই পারের জীবনযাপন। স্থানীয়ভাবে কষ্ট করে বাশেঁর সাঁকো দিয়ে নদ পাড় হলেও বিপদে পড়তে হয় বর্ষায়। সে সময় কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা করতে নিতে নিতেই অনেক সময় রোগী মারা যায়। সেতুর জন্য আশপাশের জমির দাম খুবই কম।
আরও পড়ুন: রাবি ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষায় ৩ ভুল, নম্বর পাবেন সবাই
স্থানীয় মোটরসাইকেলচালক হেলিম মোল্লা বলেন, ‘আমি সব সময় এই সড়ক দিয়ে চলাচল করি। এখন বাঁশের সাকোঁ থাকলেও বর্ষাকালে নদী পাড়ে এসে ২০ কিলোমিটার ঘুরে ওপারে যেতে হয়। সীমান্ত সড়কের সব উন্নয়ন এই নদের ওপর সেতু না থাকার কারণে শেষ হয়ে গেছে। আমাদের দাবি থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সীমান্ত সড়ক নির্মাণের সময় সেতুর বিষয় প্রস্তবনায় ছিল না। আমরা ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। সেতুটি যেহেতু ৩০০ মিটার বা ১ হাজার ফুট দীর্ঘ তাই এটি পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।’