এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪, ০৯:০৩ AM , আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৪, ০৯:১১ AM
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র কাছাকাছি এলাকায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেভাল ফোর্স । আকাশ পথে এমভি আবদুল্লাহকে ঘিরে চক্কর দিচ্ছে ইইউ নেভির হেলিকপ্টার। সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যু দমনে ‘অপারেশন আটলান্টা’ নামে কার্যক্রম কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে ‘অপারেশন আটলান্টা’ তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) বাংলাদেশি পতাকাবাহী পণ্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে ঘিরে তাদের কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে।
এসব ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি থেকে বাংলাদেশের জিম্মি জাহাজটিকে দেখা যাচ্ছে। ইইউ নেভাল ফোর্সের দুই সদস্য জাহাজটির দিকে তাকিয়ে আছেন। যা যুদ্ধজাহাজটি থেকে এমভি আবদুল্লাহ’র খুব কম দূরত্বই নির্দেশ করে। অপর দুটি ছবি ও একটি ভিডিওতে যুদ্ধজাহাজ থেকে ইইউ নেভাল ফোর্সের একটি হেলিকপ্টার জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি জাহাজটি গত তিনদিন ধরে সোমালিয়ার গোদবজিরান উপকূলের দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে। এর আগে গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। দস্যুদের কাছে জিম্মি আছেন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।
পরে ১৪ মার্চ এক বিবৃতিতে ইইউ নেভাল ফোর্স জানায়, ‘অপারেশন আটলান্টা’র আওতায় তাদের একটি যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশি জাহাজটিকে অনুসরণ করছে। তারা বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
১৮ মার্চ রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে দেশটির পুলিশ ও বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা মিলে সোমবার (১৮ মার্চ) অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশ বাহিনীর বরাতে তারা এ তথ্য জানায়।
এদিকে ইইউ নৌবাহিনীকে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত রাখতে জিম্মি নাবিকদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে জলদস্যুরা। দেশের সিনিয়র নাবিক ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খান জানান, ইইউ নৌবাহিনীর চাপে নাবিকদের এখন ২৪ ঘণ্টাই জাহাজের ব্রিজে অবস্থান করতে হচ্ছে। এছাড়া মাঝেমধ্যে ভিএইচএফ (ওয়াকি-টকি) ব্যবহার করে নৌবাহিনীকে অনুরোধও জানাতে হচ্ছে যেন কাছে না আসে।
তবে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ এবং সরকার, নাবিকদের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই এর আগে ইইউ নেভাল ফোর্স জিম্মি জাহাজটি উদ্ধারে অভিযানের কথা জানালেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মতি দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেছিলেন, ‘আমরা ইইউ নেভাল ফোর্সকে অভিযান পরিচালনার অনুমতি দেইনি। তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করছি, কীভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে নাবিক ও ক্রুদের কোনো ক্ষতি ছাড়াই জাহাজটি উদ্ধার করা যায়।’
এছাড়া ছিনতাই হওয়া জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে ‘মধ্যস্থতাকারী’ নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল জাহাজের মালিক কবির গ্রুপ। সর্বশেষ বুধবার প্রথমবারের মতো জলদস্যুরা জাহাজের মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।