‘কত কার-বাস চলে গেল, মীমের লাশ নিয়ে গেলেন গরীব রাজমিস্ত্রী’

শর্মী হোসাইন
শর্মী হোসাইন   © টিডিসি ফটো

সকাল ৯.৩০য় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সির ডাক্তারের ফোন পেলাম। ইংরেজি বিভাগের আন্ডারগ্রাজুয়েটের ছাত্রী মায়শা মমতাজ মিম কুড়িলের সামনে বাইক দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। ডাক্তার জানালেন হাসপাতালে তার লাশ নিয়ে গিয়েছেন একজন গরীব রাজমিস্ত্রি।

আহা, কত গাড়ী, বাইক, বাস হয়তো পাশ দিয়েই চলে গেছে। কারো সময় হয়নি থামার। হাসপাতালে আনার পর তার ব্যাগে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। আমার নম্বর ডাক্তার পেয়েছেন আমার আরেক ছাত্রীর কাছ থেকে। জিজ্ঞাসা করলেন মেয়েটার বাবা-মা'র সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব কিনা। আমি সাথে সাথে প্রক্টর অফিসকে জানালাম। উনারাও খবর পেয়েছেন। তারা বাবা এখন কুর্মিটোলার পথে। মেয়ের মৃত্যুসংবাদ এখনো জানানো হয়নি তাকে। কি নিদারুন বিস্ময় অপেক্ষা করছে ভদ্রলোকের জন্য!

আরও পড়ুন: রাজধানীর সড়কে নর্থ সাউথের ছাত্রীকে পিষে দিল গাড়ি

আজ আমাদের বিভাগে একটা ইভেন্টে আসার জন্য মেয়েটা রওনা হয়েছিল। দুই বছর অনলাইনে ক্লাস করা বাচ্চা মেয়েটা হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের এইসব এক্সট্রাকারিকুলার অনুষ্ঠানে খুব আনন্দ নিয়ে যুক্ত হয়েছিল- কিছু কাজ শিখবে, প্রিয় বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিবে, রাতে কিছু ছবি পোষ্ট করবে। এইই তো। শেষ হয়ে গেল সব।

শহরের সড়কগুলো কেন এরকম তরুণখেকো হয়ে উঠলো জানেন? কেন রাস্তায় স্পিড লিমিট দিতে পারিনি আমরা? কেন একটা নূন্যতম নিরাপদ সড়ক বানাতে পারিনি আমরা? নিজেকে এই প্রশ্ন গুলো করেন প্লিজ।

মনে পড়ছে ২০১৮ সালে এই কুড়িলেই যে স্কুলছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নিরাপদ সড়কের জন্য ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই মেয়েটির নামও ছিল মিম, তার বাবা ছিলেন একজন বাসচালক।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক।


সর্বশেষ সংবাদ