দীর্ঘদিন পর ঢাবির জিয়া হলের বন্ধন মেস চালু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বন্ধন মেস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বন্ধন মেস  © টিডিসি ফটো

চার মাস বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বন্ধন মেস চালু করা হয়েছে। এতে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে কমবে বলে মনে করছেন হল সংশ্লিষ্টরা। এদিকে মেস চালু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাতে মেসটি চালুু করায় শিক্ষার্থীরা খাওয়া-দাওয়ার জন্য সেখানে আসে। তখন নতুন-পুরনো শিক্ষার্থীদের আগমনে মেসটি আবারও মিলনমেলায় পরিণত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুন, সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত, মেসের সদস্যবৃন্দ এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

মেস পরিদর্শনে হলের প্রাধ্যক্ষ ও নেতৃবৃন্দরা

 

আরও পড়ুন: জিয়া হলে দীর্ঘদিন ধরে মেস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

মেস চালু হওয়াতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মেসের সদস্য আওয়াল আহমেদ উচ্ছাস প্রকাশ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, “এতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। এখন আর খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না, সময়টা বেঁচে যাবে। তাছাড়া, মেসের পরিবেশ অনেকটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। মানও অন্যান্য জায়গার তুলনায় ভাল।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আওয়াল আরও জানিয়েছে, সামনে রমজান মাস। এর আগে মেস চালু হওয়াতে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের অনেক উপকার হবে। দীর্ঘদিন পর মেস চালু হওয়ায় অনেক ভাল লাগছে। খাবার খেতে এসে আবার আগের মত মেসের সদস্য বন্ধু-বান্ধব, সিনিয়র এবং জুনিয়র ভাইদের সঙ্গে দেখা হবে।

চালু হওয়া মেসে খাবার খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

 

আরও পড়ুন: হল খোলার পরেও খোলেনি ঢাবির ৪ হলের মেস

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থী নাভিদ আঞ্জুম বলেন, “ যেহেতু মেস চালু হয়েছে তাই এখন আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে এখানে খাবার খেতে পারবো। মেসটি চালু হওয়াতে খুশি হয়েছি। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এতে উপকৃত হবে।”

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবুল কালাম আজাদ জানান, দীর্ঘদিন পর মেসটি আবার চালু হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে। হলের সবাই খুব আন্তরিক বলেই মেসটি আবারও চালু হয়েছে। এটি সত্যি অনেক প্রসংশনীয় কাজ। এ কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

মেসের আরেক সদস্য জহিরুল ইসলাম জানান, মেস চালু হয়েছে। গতকাল রাতে সেখানে খেয়েছি। এতে আমি মোটামুটি খুশি। আরও দুয়েকদিন পর খাবারের সত্যিকার মান বুঝা যাবে। তাই মেসের খাবার কেমন এ বিষয়ে এখনই অগ্রিম কিছু বলতে চাচ্ছি না।

আরও পড়ুন: ঢাবি হলের অপরিচ্ছন্ন ও অপুষ্টিকর খাবারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন, আমি সব সময় ছাত্রদের জন্য এটা করতে চেয়েছি। কিন্তু এতদিন ধরে পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য না পাওয়ায় তা চালু করতে পারিনি। কেননা, মেস চালু করতে অন্তত একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সদস্য থাকা লাগে; এখন পর্যাপ্ত সংখ্যক ছাত্র আসছে তাই শুরু করেছি, বাকিটা এখন শিক্ষার্থীরা যদি আগ্রহী হয় তবে মেস চলবে। পুরো ব্যাপারটা ছাত্রদের, তাদেরই মূল দায়িত্ব।

তাছাড়া, এটি চালু হওয়াতে এখন নিশ্চয় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবারের কষ্ট কমবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালের মার্চে করোনার সংক্রমণ আতঙ্কের মধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের প্রিয় ‘বন্ধন’ মেস। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর ২০২১ সালের অক্টোবরে করোনা মহামারির মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু হলগুলো খুলে দেয়া হলেও বন্ধ ছিল বেশ কয়েকটি হলের মেস। বন্ধ থাকা মেসগুলোর মধ্যে ‘বন্ধন’ মেসও ছিল। হল খোলার চার মাস পর মেসটি আবার চালু হওয়াতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পালা ঘুঁচলো এবার।


সর্বশেষ সংবাদ