ঢাবি শিক্ষার্থী ফিরোজের মৃত্যু নিয়ে তৈরী হয়েছে রহস্য

  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফিরোজের মৃত্যু ঘিরে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। ফিরোজ আত্মহত্যা করেছেন নাকি এটি কোনো দুর্ঘটনা, তা এখনো জানা যায়নি। ফিরোজের কক্ষে তার পড়ার টেবিলের উপর রাখা একটি প্যাডে ফিরোজের কিছু হতাশার কথা লেখা রয়েছে। তবে এই লেখা ফিরোজের হাতের লেখা নয় বলে দাবি করেছেন ফিরোজের বড় ভাই। তিনি জানান, তার এবং ফিরোজের হাতের লেখা দেখতে প্রায় একই।

কাজী ফিরোজের বন্ধুরা জানিয়েছেন, এই লেখাটা ফিরোজের হাতের লেখার মতোই তাদের মনে হচ্ছে। তবে ফিরোজের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে আসা তার বড় ভাই জানিয়েছেন, তার এবং ফিরোজের লেখা প্রায় একই। প্যাড খাতায় থাকা এই লেখাটা ফিরোজের হাতের লেখা নয়। এরপর তারা ফিরোজের মরদেহের সুরতহাল করার সিদ্ধান্ত নেন।

মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে হল থেকে নিচে পড়ে মারা যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফিরোজ। পরে রাত দুইটা ৪৯ মিনিটে ফিরোজের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, ফিরোজের টেবিলের উপর মুরগির মাংসসহ ভাত রাখা রয়েছে।

এই খাবার বন্ধুরা তার জন্য এনে রেখেছিল। তবে পুরোটা না খেয়েই রুম থেকে বের হয়ে গিয়েছিল ফিরোজ। এর কিছুক্ষণ ফিরোজের পড়ে যাওয়ার খবর পায় বন্ধুরা।

ফিরোজের টেবিলে চোখ পড়তেই দেখা যায়, সেখানে একটি প্যাড খাতা অর্ধ খোলা অবস্থায় রাখা। তার উপর দুইটা সিগারেটের প্যাকেট। সেই প্যাকেট দুইটি সরিয়ে দেখা যায়, সেখানে পৃষ্ঠা ভর্তি লেখা।

‘পৃষ্ঠার ওপরে তারিখের জায়গায় লিখা ছিল ১/০৯/২৩। আর এর নিচে লিখা আছে, মানুষ বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের সামনে আমার যেহেতু সম্মান নাই। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আমার কোনো অধিকার নাই। আমারে মৃত্যুর দায়ভার একান্ত আমার। সরি মা! বাড়ি থেকে তোমাকে দিয়ে আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে হতাশ।’ এই লেখার নিচে মাঝ বরাবর লেখা, ফিরোজ। এর নিচে লিখা হয়েছে রাত: ১১টা ৩।’

পৃষ্ঠার বাকি অর্ধেকে আরও লেখা আছে, ‘আমার ওয়ালেটের কার্ডে কিছু টাকা আছে। বন্ধুদের কাছে অনুরোধ রইলো মায়ের হাতে দিতে।  আমার লাশের পোস্টমর্টেম না করে যেন বড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কোনোরূপ আইনি ঝামেলায় কাউকে যেন জড়ানো না হয়। সবাই বাঁচুক। শুধু শুধু পৃথিবীর অক্সিজেন আর নষ্ট করতে চাই না।’এই লেখার নিচে আবারও লেখা রয়েছে, ‘ফিরোজ।’ এর নিচে লেখা হয়েছে, ‘রাত ১১টা ৫।’


ফিরোজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইনিজ ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়।


সর্বশেষ সংবাদ