রাজনীতির চিকিৎসকও ছিলেন বঙ্গবন্ধু: ভিসি মশিউর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২২, ০৫:১৬ PM , আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২২, ০৫:৫১ PM
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সব সময়ের আশ্রয়। তিনি আগামীর পথনির্দেশক। বঙ্গবন্ধু অদম্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অনুপ্রেরণা। তিনি শুধু একজন রাজনীতির কবিই ছিলেন না। তিনি একজন বিজ্ঞানী, শিল্পী। ছিলেন রাজনীতির চিকিৎসকও।
আজ বুধবার (১৬ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও অদম্য বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।
ভিসি ড. মশিউর রহমান বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নই ছিল অদম্য বাংলাদেশ। তার মতো করে বুক চিতিয়ে আর কেউ বাংলাকে ভালোবাসতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর মতো আর কেউ বাংলা মায়ের মুক্তির জন্য বছর বছর কারাগারে থাকতে পারেননি। তার মতো করে সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে একত্রিত করে অর্গানিক সলিডারিটির মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া নেতা বাংলা তো বটেই, উপমহাদেশে আর কেউ জন্মায়নি। তার মতো করে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ যেমন কেউ দিতে পারেননি। আবার একইসঙ্গে ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে তাঁর মতো নেতৃত্বও কেউ দিতে পারেননি।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ভিসি বলেন, উপমহাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে কেন্দ্র করে যে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল, যার সঙ্গে আমাদের জুড়ে দেয়া হলো। বঙ্গবন্ধু ঠিকই বলেছিলেন- এটি ছিল রাজনীতির একটি ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত। ওই ভুল অপসারণ করতে হবে। একজন চিকিৎসকের মতো করে তিনি এটি বললেন। বঙ্গবন্ধু বিচ্ছিন্নতাবাদী হননি। একজন যথার্থ চিকিৎসকের মতো, যথার্থ রাজনীতির সার্জারির মতো, তিনি ওই ভুল সিদ্ধান্ত অপসারণ করেছেন।
“পাকিস্তান যে একটি ভ্রান্ত দেশ সেটি যদি অপসারণ করা না হতো, সেটি থেকে যদি আমরা মুক্ত হতে না পারতাম তাহলে বাংলাদেশ ভ্রান্ত সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় অতলে হারিয়ে যেতো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বকীয়তাকে অনুধাবন করতে পেরেছেন। এর কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে তিনি বুঝতে পেরেছেন। যেই জাতীয়তাবাদ কোনোভাবেই পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদের সঙ্গে যেতে পারে না। তিনি তার সঠিক ধারায় জাতীয়তাবাদের রাজনীতির কবি হিসেবে- আর দায়ে রাখতে পারবা না- বলে পৃথক করে নিয়ে আসলেন। এখানে তিনি শুধুমাত্র বাঙালি বা বাংলাদেশকে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে সৃষ্টি করেননি, এই উপমহাদেশের রাজনীতির কুপমণ্ডুকতাকে ভেঙে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে ভেঙে, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিশ্ব ব্যবস্থাকে ভেঙে বিশ্ব দরবারে আধুনিক জাতিরাষ্ট্র নির্মাণের উপমা কবির মতো করে তৈরি করেছেন। সেকারণে তিনি আমাদের মহাকালের মহানায়ক, মহামানব।”
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর, জাগোনিউজ২৪ ডটকমের ডেপুটি এডিটর ড. হারুন রশীদ। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।