জুলাই-আগস্টে নিহতদের মধ্যে ১২ শতাংশ শিশু: জাতিসংঘ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৩ AM , আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৭ AM

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ৬৬ শতাংশ মিলিটারি রাইফেলসে (এমন অস্ত্র সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করে), ১২ শতাংশ শটগানের গুলিতে এবং ২ শতাংশ পিস্তলের গুলিতে প্রাণ হারান। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ শতাংশ ছিল শিশু। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভা থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। বিক্ষোভ চলাকালে নিহতদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ মিলিটারি রাইফেলসে (এমন অস্ত্র সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করে), ১২ শতাংশ শটগানের গুলিতে এবং ২ শতাংশ পিস্তলের গুলিতে প্রাণ হারান। প্রতিবেদন অনুযায়ী নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ শতাংশ ছিল শিশু। এ ছাড়া সে সময় ১১ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেফতার ও আটক করা হয়েছিল।
আরো পড়ুন: জিরো পয়েন্টে মাকে শেষ বিদায় জানালেন ভারতীয় মেয়ে
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দল প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বগুড়া, সিলেট ও গাজীপুর—এই আট শহরে অনুসন্ধান চালায়। মূলত যে শহরগুলোতে বেশি মাত্রায় বিক্ষোভ হয়েছিল, সেসব স্থানে সরেজমিন কাজ করে জাতিসংঘের দলটি। তারা ২৬৬ জনের বেশি ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন তথ্যানুসন্ধানের সময় বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই সংস্থাকে পুলিশ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের ৯৫ জন সদস্যের নাম এবং তাঁদের ভূমিকা কী ছিল, তার বিস্তারিত সরবরাহ করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তিরা বিক্ষোভের সময় সহিংস হামলায় ব্যবহারের জন্য দলীয় লোকজনকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। অস্ত্র সরবরাহ যারা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন তৎকালীন সংসদ সদস্য, ১৪ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, ১৬ জন যুবলীগ নেতা, ১৬ জন ছাত্রলীগ নেতা এবং ৭ জন পুলিশ সদস্য।
আরো পড়ুন: জাবির ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু, আসনপ্রতি লড়বেন ১২২ শিক্ষার্থী
বিক্ষোভের মধ্যে ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি ‘কোর কমিটি’র বৈঠক হয়। বৈঠকে পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির প্রধান ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিজিবির কমান্ডারকে আরও দ্রুত প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর পরদিন (১৯ জুলাই) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ দমনের জন্য বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে বলেছিলেন এবং বিশেষভাবে ‘বিক্ষোভের মূল হোতা, গন্ডগোল সৃষ্টিকারীদের গ্রেফতার, হত্যা এবং হত্যার পর লাশ লুকিয়ে রাখা’র নির্দেশ দিয়েছিলেন।