ছাত্রাবাস যেন মরণফাঁদ, রেলিং ভেঙে গুরুতর আহত ছাত্রদলের আহ্বায়ক
- আব্দুল্লাহ খান, কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৬ PM , আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৭ PM
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবি নজরুল সরকারি কলেজের পুরোনো জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ এক ছাত্রাবাসের নাম শহীদ সামসুল আলম ছাত্রাবাস। প্রায় সময়ই কোন না কোন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় এখানের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। কখনো পলেস্তারা খসে পড়ে, আবার কখনো দোতলা ছাদের রেলিং ভেঙ্গে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রাবাস নয়, যেন মরণফাঁদ।
জানা গেছে, কবি নজরুল সরকারি কলেজের শহীদ সামসুল আলম ছাত্রাবাসে থাকেন প্রায় ১৫০ শিক্ষার্থী। যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুকিয়ে পানি পড়ে প্রায় প্রতিটি রুমে। এসব বিষয়ে প্রশাসনকে একাধিকবার শিক্ষার্থীরা অবগত করলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। যুগের পর যুগ এমনই হাল কবি নজরুল সরকারি কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাসটিতে।
সর্বশেষ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হন কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইরফান আহমেদ ফাহিম।
জানা যায়, ছাত্রদলের সদস্য সচিব নাজমুল হোসেন ও আহ্বায়ক ইরফান আহমেদ ফাহিম বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের শহীদ শামসুল আলম ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে গিয়ে ছাত্রাবাসের দোতলার রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে যান।
২০৮ নম্বর রুমের শিক্ষার্থীরা জানান, নাজমুল ভাই এবং ফাহিম ভাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। কিছুক্ষণ পরই ফাহিম ভাই ২০৮ নম্বর রুমের বেলকনির রেলিং এবং ঢালাই খসে দোতলা থেকে নিচে পড়ে যান। প্রথমে আমরা তাকে আহত অবস্থায় সূত্রাপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তারা আরও জানান, এর আগেও এ ধরনের ঘটনার বহু নজির আছে এই শহীদ শামসুল আলম ছাত্রাবাসে। হলের ছাদের ঢালাই খসে পড়ার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে এই ছাত্রাবাসে। এতে বহু শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিগত বছরগুলোতেও। তবে সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি কলেজ প্রশাসন। প্রতিবারই দুর্ঘটনার পরই নামমাত্র সংস্কার করতে দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর শুধু ওই একটি জায়গায়ই মেরামত করে কলেজ প্রশাসন। যা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই না।
আহত ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইরফান আহমেদ ফাহিম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সদস্য সচিব নাজমুল হাসান এবং আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে ছাত্রাবাসে যাই। ২০৮ নম্বর রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। তারপর বারান্দার রেলিংয়ে হাত রাখতেই বারান্দার রেলিং ভেঙে আমি নিচে পড়ে যাই। পরবর্তীতে সবাই ধরাধরি করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান গতকালকের ঘটনায় খুবই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কলেজের ছাত্রাবাস পুরোনো পরিত্যক্ত ভবন হওয়ায় সরকার থেকে কোন অনুদান আসে না। এটি হেরিটেজের অংশ হওয়ায় ভাঙাও সম্ভব হচ্ছে না। ছাত্রাবাসটিতে শিক্ষার্থীরা জীবন ঝুঁকি নিয়েই অবস্থান করছেন। সরকার থেকে অনুদান না আসায়, কলেজের নিজস্ব ফান্ড থেকেই কিছু কিছু সংস্কার করা হয়েছে। তবে এর আগে একটা সংস্কার কমিটি গঠন করা হলেও, যিনি দায়িত্বে ছিলেন তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়, ফলে সংস্কার কাজ পিছিয়ে পড়ে। তবে,আমরা আবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি।