চবির ১১০ মিটার উঁচু পাহাড়ে বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার বেশ রোমাঞ্চকর

  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়! যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজারো মেধাবী মুখের আনাগোনা। তেমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় যেটি কিনা দেশের স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি। সবুজ পাহাড়ে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এবং আয়তনে সবচেয়ে বড় ক‍্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। 

২১০০ একরের এই ক্যাম্পাস যেন নানারূপ ও বৈচিত্র্যের সমাহার। যার বৈচিত্রময়তা এবং অপরূপ সৌন্দর্য্যে সত্যিই যে কাউকে বিমোহিত করবে। এই ক্যাম্পাসে রয়েছে বিশাল আকৃতির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, ঝর্ণা, রয়েছে রহস্যে ঘেরা উঁচু পাহাড় এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন। রয়েছে দক্ষিণ ক্যাম্পাসের ফরেস্ট্রি, যেখানে মিতালি করে হরেক-রকমের পাখপাখালি। সৃষ্টিকর্তার এক অশেষ দান, তিনি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছেন এই বিশাল ক্যাম্পাসটি। দিয়েছেন সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠত্ব। 

পবিত্র রমজান মাস একটি আত্মশুদ্ধির মাস। আত্মশুদ্ধির এই মাসের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের নিয়মিত পাঠ কার্যক্রম চলমান থাকায় শিক্ষার্থীরা নিজ পরিবারের সঙ্গে ইফতার আয়োজন ও রমজানের অন্যান্য কার্যক্রমে সামিল হতে পারেন না। 

তাই তারা মনে করে থাকেন এই ক্যাম্পাস তাদের দ্বিতীয় বাড়ি। যার সদস্যরা হলেন কটেজের রুমমেট, হলের বন্ধুবান্ধব, বিভাগের সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়র, জেলা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষী এবং শিক্ষক মহোদয়গণ। ফলে এই সদস্যদের সঙ্গে রমজানের আয়োজনে অংশগ্রহণ করে থাকেন তারা। 

চলতি রমজান মাসের ৫ম দিনে (১৬ মার্চ) আমার আবাসিক হলের (সোহরাওয়ার্দী হল) বন্ধুরা হঠাৎ বায়না ধরলো ক্যাম্পাসে নিরিবিলি কোন এক স্থানে এডভেঞ্চারময় ইফতার আয়োজন করার। তাদের মধ্যে অন্যতম আমার রুমমেট সবুজ, সাব্বির এবং হলের বন্ধু হাকিম, শোয়াইব এছাড়াও শহর থেকে আগত অতিথি বন্ধু রেদোয়ান। 

এই আয়োজনের গন্তব্য নির্ধারণ করলাম ক্যাম্পাসের নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু হলের উত্তর-পশ্চিম কোণে নীড়া পাহাড় নামে সুউচ্চ পাহাড়ে। যার উচ্চতা প্রায় ১১০ মিটার। যে পাহাড়ের উঁচু থেকে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু এবং অতীশ দীপঙ্কর হল। 

এছাড়াও আশেপাশের সবুজে ঘেরা পাহাড়গুলো সত্যিই যে কাউকে মুগ্ধ করবে। সবমিলিয়ে সেদিন খুব সুন্দর একটি সন্ধ্যা কেটেছে বন্ধুদের সঙ্গে। আত্মশুদ্ধির মাসে জনসমাগোম এড়িয়ে নিস্তব্ধ-নিড়িবিলি ও সমতল থেকে এত উঁচু পরিবেশে ইফতারের আনন্দকে বাড়তি পূর্ণতা দান করে।

এমন পরিবেশ হয়তো দেশের সর্বদক্ষিণের পাহাড় ও গাছে ঘেরা প্রকৃতির অপার লীলাভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েই সম্ভব। রমজানে পরিবার পরিজন কাছে না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানুষগুলো এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ নতুন করে কাছে টানে।

লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ