কতটা সহজ হবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন?

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে  © ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে মিয়ানমার রাজি হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল এ তথ্য জানান তিনি। তবে দেশটির রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চল এখন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সহজ হবে না বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। 

জানা গেছে, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার চাপ মাথায় নিয়ে তাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে অনেকটা এগিয়েছে বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমারে জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মীর মধ্যকার যুদ্ধ এ লক্ষ্য পূরণে শঙ্কাও তৈরি করেছে। দেশটিতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও ঘরছাড়া। তারাও সুযোগ পেলে পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশে। এতকিছুর মধ্যে নিরাপদ প্রত্যাবসন নিয়ে শঙ্কায় বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৩ এ বসবাস করা হেদায়েত উল্লাহ্ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারপর মিয়ানমার পাঠাতে হবে। কারণ বর্তমানে দেশে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে। সেখানে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা মহাবিপদে আছেন। তাই এ পরিস্থিতিতে ফিরে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হতে চান না তারা।

আরেক রোহিঙ্গা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমাদের নিরাপদ আশ্রয় দানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা চাই, বাংলাদেশ সরকার আমাদের নিরপত্তা নিশ্চিত করে মর্যাদার সঙ্গে পাঠাক। তবে সত্য এটা যে, বর্তমানে জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই রাখাইন রাজ্যে। তাহলে আমাদের প্রত্যাবাসন কীভাবে সম্ভব হবে?’

আরো পড়ুন: অর্থ নিয়ে বিরোধে আহত যুবদল নেতার মৃত্যু, অভিযুক্ত বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন

জানা গেছে, ২০২৩ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর আমন্ত্রণে একদল রোহিঙ্গাকে রাখাইন পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন তারা ফিরে এসে বলেছিলেন, সেখানে তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। তারা সেখানে যেতে রাজি নন। 

এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বর্তমানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব বলে মনে হয় না। রাখাইনের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থিতিশীল। যেখানে নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিবও বলেছেন, রাখাইনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই প্রত্যাবাসনের কথা বিবেচনা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাদের বসতি ছিল, সেসব এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে? কখন, কীভাবে, কার ক্লিয়ারেন্সে তা সম্ভব হবে—এসবই অনিশ্চিত।’


সর্বশেষ সংবাদ