আগামী বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের পাঠানো যাবে কি না, প্রেস সচিবের সংশয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩২ AM , আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪২ AM

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রথম ধাপে প্রত্যাবাসনের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যোগ্য বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তারা জানিয়েছে, আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গা চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে।
শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে এ তথ্য জানান মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ।
তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সন্দিহান আগামী বছরের মধ্যে তাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না যে আগামী বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে পারব। বিশেষ করে রাখাইনে আরাকান আর্মির (AA) দখল প্রক্রিয়ার ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের যে কৌশলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হলো মিয়ানমার
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বার্মিজ জান্তাকে খুশি করতে গিয়ে তথাকথিত ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’র চাটুকার ও কূটনীতিকরা একটি নতুন শব্দ উদ্ভাবন করেন—FDMN বা (Forcibly Displaced Myanmar National)। এই শব্দটি শুধু একটি কৌশল নয়, এটি বার্মিজ গণহত্যার বর্ণনাকে বৈধতা দেওয়ার এক ভয়ংকর প্রচেষ্টা, যাতে বোঝানো হয় যে রোহিঙ্গা বলে কেউ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, রোহিঙ্গারা কোনো 'FDMN' নয়, তারা শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাস, শিল্প ও সংস্কৃতির ধারক একটি জাতি। ‘FDMN’ শব্দটি ব্যবহার করে তাদের প্রকৃত পরিচয়, সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চীনের কুনমিং শহরে এবং ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক (BIMSTEC) শীর্ষ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে আলোচনা করে, তখন তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার জনগোষ্ঠীকে তাদের প্রকৃত পরিচয়ে পরিচিত করে ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে। জান্তার কর্মকর্তারাও শেষমেশ এই পরিচয় স্বীকার করতে বাধ্য হন। আমাদের সঙ্গে বৈঠকে তারাও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। (আমি নিজে ওই দুটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম)’
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না যে আগামী বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে পারব কি না। বিশেষ করে রাখাইনে আরাকান আর্মির (AA) দখলপ্রক্রিয়ার ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। তবে গত কয়েক দিনে যেটা দেখেছি, তা আমাদের নেতৃত্ব এবং শীর্ষ পর্যায়ের কূটনীতিকদের এক সাহসী ও দৃঢ় অবস্থান। মিয়ানমার জান্তা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে। এখন দরকার টানা কূটনৈতিক চাপ বজায় রাখা, যাতে তারা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, পূর্ণ মর্যাদা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তার সঙ্গে ফিরিয়ে নেয়।’