যেভাবে গ্রেফতার হলেন বুলবুলের তিন হত্যাকারী

বুলবুল আহমেদ
বুলবুল আহমেদ  © ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে (২২) হত্যার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কামরুল নামে গ্রেফতার একজনের বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার বুলবুলের মোবাইল ফোন এবং হত্যায় ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ জুলাই) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানা প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ। 

গ্রেফতার তিন জন হলেন, কামরুল ইসলাম (২২), আবুল হোসেন (১৮), মোহাম্মদ হাসান (১৮)। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের টিলারগাঁও এলাকার বাসিন্দা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে মো: আজবাহার আলী শেখ ওই তিন হত্যাকারী গ্রেফতারের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ২৬ তারিখ ভোরের দিকে আমরা সন্দেহজনক তিনজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করি বিভিন্ন স্থান থেকে। গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গতকাল রাত ১২টার দিকে এই তিনজনের ভেতরে একজন আবুল হোসেন নামে একজন তার দোষ স্বীকার করে এবং সে আমাদের কাছে স্বীকারোক্তি দেয় যে সে সহ আরো দুইজন এই  ঘটনা ঘটিয়েছে।

পরবর্তীতে আমরা তদন্তে নেমে কামরুল ইসলাম নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি এরপর হাসান নামে আরো একজনকে আমরা গ্রেফতার করে তিনজন আসামীকে আমরা ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা প্রত্যেকেই ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা অকপটে স্বীকার করে। এ ঘটনায় যে ছুরি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি এবং ভিক্টিমের মোবাইল যেটি তারা ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছিল সেটি কোথায় আছে আমাদের কাছে স্বীকারোক্তি দেয়। স্বীকারোক্তির পর আসামী কামরুল ইসলামকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীর লাগোয়া টিলারগাঁও আমরা যাই এবং কামরুল ইসলামের বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত মোবাইল ও ছুরিটি উদ্ধার করি। এই ছুরিতে এখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীর রক্ত লেগে আছে। আমরা এতে মর্মাহত। আমরা ধন্যবাদ জানাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সকল ছাত্র যারা অক্লান্ত সহযোগিতা করেছে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য। আমরাও তাদের সহযোগিতা করেছি। আশা করছি ভিক্টিমের পরিবার ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে না এবং তারা অবশ্যই শতভাগ ন্যায় বিচার পাবেন।

ঘটনাটি ছিনতাই নাকি অন্য কোনো কারণ আছে?
এখন পর্যন্ত আমরা পর্যন্ত তদন্তে আমরা যতদূর জেনেছি এটি একটি পরিপূর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনা। তারা পূর্বে থেকেই বিকেল ৪টা থেকে, সাড়ে ৪টার দিকে ২জন সেখান থেকে চলে যায় কথা বলতে বলতে বাকি ২জন টিলায় অবস্থান করছিলেন। সন্ধ্যার পরে কামরুল আসেন। ভিক্টিম বুলবুল ও মার্জিয়াকে একাকী পেয়ে তাদের কাছে মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাই করার সময় বুলবুলের সাথে ধাক্কাধাক্কি ধস্তাধস্তি হয়। বুলবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এর চিহ্ন রয়েছে।

জানা যায়, সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গাজীকালুর টিলার পাশে ছুরিকাঘাত করা হয় শাবির লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে (২২)। তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বুলবুলের বাড়ি নরসিংদী সদরের নন্দীপাড়া গ্রামে। তিনি শাবির শাহপরান হলের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এ ঘটনায় সিলেটের জালালাবাদ থানায় মঙ্গলবার হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ