আওয়ামীপন্থী শিক্ষক জামালকে ধাওয়ার ঘটনা গুন্ডামির সঙ্গে তুলনা শিক্ষক নেটওয়ার্কের

১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৯ PM , আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪০ PM
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনকে ডাকসু নেতা এবি জুবায়েরের ধাওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এ ঘটনাকে গুন্ডামির সঙ্গে তুলনা করেছে সংগঠনটি। 

আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এ বি জুবায়েরের এই গুন্ডামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয় তবে তারা তাদের মেরুদণ্ডহীনতা ও জুবায়েরের অপরাধের রক্ষক বলে নিজেদের প্রমাণ করবে। এর আগেও সাধারণ হকারদের সাথে গুন্ডামি করেছেন জুবায়ের। এভাবেই মানুষ নিপীড়ক হয়ে ওঠে। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ছাত্রদের ব্যবহার করে ‘বিচার’ চালু করছেন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলছে, অধ্যাপক জামালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিতে হলে তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব পুলিশের। বিচার হতে হবে আইনি প্রক্রিয়ায়। শিক্ষার্থীদের বা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নয়।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ধাওয়া খেয়ে পালালেন ঢাবি অধ্যাপক আ ক ম জামাল

বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, জুবায়েরের ভাষা ও শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ছাত্রলীগের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমরা দেখেছি যে হলগুলোতে প্রশাসন নয়, বরং ছাত্রলীগ একই কায়দায় কাউকে কাউকে ‘অমুকে শিবির’ বলে মেরে-ধরে ফোন চেক করে থানায় দিত। ‘অমুক জায়গায় শিবির গোপনে মিটিং করছে’ দাবি করে পিটিয়ে পুলিশে দিত।

“ছাত্রলীগের ঐ আচরণকে যেমন আমরা ফ্যাসিবাদ বলি, এই ডাকসু সম্পাদকের আচরণকে কেন ফ্যাসিবাদী বলব না? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি জুবায়েরের এই গুন্ডামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা তাদের মেরুদণ্ডহীনতা ও জুবায়েরের অপরাধের রক্ষক বলে নিজেদের প্রমাণ করবে। এর আগেও সাধারণ হকারদের সঙ্গে গুন্ডামি করেছেন জুবায়ের। এভাবেই মানুষ নিপীড়ক হয়ে ওঠে। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ছাত্রদের ব্যবহার করে ‘বিচার’ চালু করছেন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছাত্রলীগের হাতে শিক্ষক হেনস্তার উদাহরণ টেনে বিবৃতিতে বলা হয়, আজ এত বড় ফ্যাসিস্ট হটিয়ে পাওয়া ক্যাম্পাসে একজন নির্বাচিত শিক্ষার্থী (এ বি জুবায়ের) একইরকমভাবে ভিন্নমতের শিক্ষককে হামলা ও হেনস্তা করছেন, যা আমাদের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশের বিরুদ্ধে বিশাল আঘাত।

অধ্যাপক জামালকে নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে জুলাই আন্দোলনে তার ভূমিকাও তুলে ধরা হয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনেও তার ভূমিকা ছিল ভয়াবহ দমন ও নিপীড়নমূলক। জামাল উদ্দিন আন্দোলনকারীদের ‘ব্রাশ ফায়ার’ করার হুমকি দিয়েছেন, বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাবগুলো দখল করে রেখে সেখান থেকে আন্দোলনের পক্ষের ছাত্রদের বহিষ্কার করেছেন। পরবর্তীতে জুলাই মাসেই শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে পোস্ট করে প্রতিরোধ গড়া শুরু করলে তিনি একাধিক শিক্ষার্থীকে ফোনে হুমকি দিয়েছেন বলেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন। ধর্ষণের শিকার নারীর পরিচয় প্রকাশ দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও তিনি কেবল তার বিরুদ্ধে পোস্ট দেবার অপরাধে এরকম একজন শিক্ষার্থীর পরিচয় প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সরাসরি তিনি হত্যাকাণ্ডের মত ফৌজদারি অপরাধে উসকানি দিয়েছেন। এতসব প্রমাণসহ সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে সত্যানুসন্ধান কমিটির কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

“এতসব প্রমাণ থাকার পরও ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত তার বিষয়ে অভিযোগ তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। আর অভিযোগ যেহেতু তদন্তাধীন, কাজেই বিচার হতে হবে আইনি প্রক্রিয়ায়। নানা অভিযোগেই জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে। কোনো শিক্ষার্থীর বা শিক্ষকের অধিকার নেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একে অন্যকে হামলা করার, লাঞ্ছিত করার।”

শিক্ষক নেটওয়ার্কের ভাষ্য, “অভ্যুত্থানের দেড় বছর পরে ছাত্ররা দলবেঁধে শিক্ষককে আক্রমণ করছে, ধাওয়া করছে, গায়ের জামা ছিনিয়ে নিচ্ছে, এগুলো সম্পূর্ণ ‘বেআইনি আচরণ’।

“যখন দেখি এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডাকসুর এক নির্বাচিত প্রতিনিধি, এটা আরও দুর্ভাগ্যজনক। সাধারণ মানুষের মবের মত আচরণ, আর নির্বাচিত প্রতিনিধির মব বনে যাওয়া ও আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া, এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। দুটোই বেআইনি, কিন্তু মাত্রাগত পার্থক্য আছে।”

বিবৃতিতে তিনটি দাবি তুলে ধরেছেন শিক্ষক নেটওয়ার্কের নেতারা-
১) অধ্যাপক জামাল উদ্দিনসহ যেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের নিপীড়নের হুমকি, আদেশ-নির্দেশ দেবার বা প্রকাশ্যে সমর্থন দেবার অভিযোগ আছে, তাদের সকলের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত করে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

২) কালক্ষেপণ না করে, চব্বিশের ৫ অগাস্টের পর থেকে ক্যাম্পাসে সংঘটিত সকল নিপীড়নের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে।

৩) এবি জুবায়েরসহ শিক্ষক হেনস্তায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

টুঙ্গিপাড়ায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করলেন ইউএনও
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
মান্না আউট, চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন শাহে আলম
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
খুবি ভর্তি পরীক্ষার ফল দেখুন এখানে
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির তারিখ ঘোষণা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হলেন মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫