স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, খাবার সঠিকভাবে হজম না হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে ডায়রিয়া, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা, এবং অপুষ্টির মতো জটিলতা। এসব সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে হজম প্রক্রিয়ার বাধাগ্রস্ত হওয়া। সঠিকভাবে খাবার হজম করা সুস্থ শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি, তাই প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, হজমশক্তি বাড়ানোর উপায়গুলো:
১. খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া: চিকিৎসকরা বলছেন, খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে পাচকরসের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যা খাবার হজমে সহায়তা করে।
২. লেবু খাওয়ার উপকারিতা: লেবু খাবারের সঙ্গে রাখা অথবা খাবার পর লেবুপানি পান করা হজম প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করতে সাহায্য করে।
৩. ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের গুরুত্ব: ডায়েটিশিয়ানদের মতে, দুধ বা দইয়ের মতো ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হজমশক্তি বাড়াতে সহায়ক। যারা দুধ খেতে পারেন না, তারা ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ বা দই ব্যবহার করতে পারেন।
৪. গ্রিন টি ও পুদিনাপাতার চা: নিয়মিত গ্রিন টি বা পুদিনাপাতার চা পান করলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক হতে পারে।
৫. আঁশযুক্ত খাবারের গুরুত্ব: ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, ফল, সালাদ, চিয়া সিড ও ইসবগুল হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
৬. পানি পান: প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে, খাবার খাওয়ার সময় অতিরিক্ত পানি পান করা উচিত নয়, এতে বদহজম হতে পারে।
৭. রাতের খাবার সময় নির্ধারণ: বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের খাবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে খাওয়া উচিত। খাবারের পরে তাড়াতাড়ি শোয়ার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
৮. নিয়মিত ব্যায়াম: দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম, যেমন হাঁটা, জগিং বা সাইক্লিং করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, যা হজমে সাহায্য করে।
৯. ভালো ঘুম: সারা দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম হজম প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে।
১০. মানসিক চাপমুক্ত জীবন: মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করা সম্ভব।
১১. ঝাল, তেল ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার: এসব খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তাই তা এড়িয়ে চলা উচিত।
১২. ধূমপান পরিহার: ধূমপান হজমের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে, তাই এটি পরিহার করা উচিত।