জাবিতে র‌্যাগ ডের ড্যান্স পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা

নৃত্যর অঙ্গভঙ্গি
নৃত্যর অঙ্গভঙ্গি  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় সংস্কৃতির নগরী। এখানে নবীন শিক্ষার্থীদের যেমন সংস্কৃতির মধ্যে দিয়ে বরণ করা হয়, তেমনি বিদায়টাও সংস্কৃতির মধ্যে দিয়েই সম্পন্ন হয়। প্রিয় ক্যাম্পাসকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট যেন চাঁপা কান্না হয়ে জমা রয় প্রিয় শিক্ষাঙ্গনে। তাইতো শেষ বেলায়ের সেই চাঁপা কান্নাকে মধুর করতে চলে হৈ-হুল্লোড় আনন্দ উৎসব। আর এর নামই হচ্ছে ‘র‌্যাগ ডে’।

প্রতিবারের মত এবারও ৪২তম ব্যাচের বিদায়ে চলছে র‌্যাগ ডে। জাঁকজমক আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে এ অনুষ্ঠান। তবে ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানে পরিবেশিত একটি নৃত্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। একটি হিন্দি গানের সাথে ৩ মিনিট ৭ সেকেন্ডের যুগল নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ঐ ব্যাচের এক ছাত্রীকে ওয়েস্টার্ন পোশাক পরিধান করে নাচতে দেখা যায়। তার পোশাক ও নৃত্যর অঙ্গভঙ্গি নিয়ে সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা।

আরও পড়ুন: ‘হলে ২৪ ঘন্টা কি হয়, এগুলো আমরা দেখব নাকি’

এই নাচের ভিডিও অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাগ ডে অনুষ্ঠানে ওয়েস্টার্ন পোশাকের এমন উদ্দাম নৃত্য ভালোভাবে নেননি নেটিজেনরা। সেটি শেয়ার করা ভিডিওগুলোর কমেন্টবক্সে গেলেই বুঝা যায়। অবশ্য নেতিবাচক কমেন্টের পাশাপাশি কেউ কেউ আবার ইতিবাচক কমেন্টও করেছে।

হাসিবুল ইসলাম হানিফ লিখেন, দেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরকম অনুষ্ঠান সত্যিই অসন্তোষ জনক। তীব্র নিন্দা জানাই। মনে হচ্ছে নব্বই দশকের সিনেমার দৃশ্য।

হাসনাইন হোসাইন লিখেন, র‌্যাগ ডের নামে পশ্চিমা সংস্কৃতি চর্চা করা হয়। এসব বেহায়াপনা ছাড়া আর কিছুই না। এসবের সাথে বাংলা সংস্কৃতির কোনো সংযোগ নেই।

মাহমুদা আক্তার লিখেন, নাচের ন ও জানেনা। তাও যদি বুঝতাম একটু নাচ জানে। ঠিক মত নাচছে তাহলে মেনে নেয়া যেতো। শুধু একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেছে এটার নাম নাকি নাচ!

শাহরিন আক্তার বকুল কমেন্ট করেন, জ্ঞানী ও সভ্য মানুষ গড়ার স্থান হিসেবে ধরা হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। তাদের এমন অশোভনীয় কার্যকলাপ সত্যিই আসল শিক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে। সকল শিক্ষার আগে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া উচিত।

ইমন আমিন লিখেন, ভার্সিটিতে পড়ে শিক্ষিত হচ্ছে, তবে সুশিক্ষিত হচ্ছে না।

রামিসা রিফা লিখেন, দিন দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অশ্লীলতার আঁতুড়ঘর বানিয়ে ফেলছে। এখান থেকে কি আর ভালো প্রজন্ম আশা করা যায়।

একজন তো খোঁচা দিয়েই লিখেন, এগুলো নাকি র‌্যাগ ডের নাচ। এজন্যই সিলেটে বসে মানুষ জন বলে এদের বিয়ে হবে না। শুভ বুদ্ধির উদয় হোক সবার, শালীনতা ফিরে আসুক পৃথিবীতে।

আরও পড়ুন: বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ ঢাবি ছাত্রীর

আরেক নেটিজেন এটিকে প্রতিভার প্রদর্শন উল্লেখ করে বলেন, মিউজিকটা পাল্টে দিয়ে এমন লাগছে, অরিজিনাল গানের সাথে নাচছে ভালোই। অপসংস্কৃতি দেশে ঢুকলে সমস্যা নাই, সেখান থেকে মানুষ প্রতিভা দেখালেই দোষ। এই মেয়ের সাথে তো ছেলেও নাচছে। ছেলে সাধু। ড্রেস সিলেক্ট করার সময়ও নিশ্চয় মেয়ে একা করেনি।

কিরঞ্জিত রায় নামে একজন লিখেন, গানের সাথে অসাধারণ নাচ। ধন্যবাদ দুজনকে। এখানে অনেকে নাচ না দেখে অন্যকিছু দেখবেন! তাদের জন্য, দৃষ্টিভঙ্গি বদলান সমাজ বদলে যাবে।

মোজাম্মেল হক রাহিম লিখেন এ পারফরম্যান্সকে সমর্থন করে লিখেন, বাঙ্গালী সংস্কৃতির মাহাত্ম্য নিয়ে কোন নেতা বা বুদ্ধিজীবী এখন কোন জ্ঞান দিতে আসবে না। র‍্যাগ ডে তে পাঞ্জাবি-জুব্বা পরলে অন্য কথা ছিলো।


সর্বশেষ সংবাদ