শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: জাবিতে নেই কোনও বিশেষ আয়োজন-কর্মসূচি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।  © সংগৃহীত

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পাশাপাশি এ বছরই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেরও সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই দিনে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল পাকিস্তানি হানাদার বর্বর সেনাবাহিনী। বুদ্ধিজীবীদের শহীদ হওয়ার সুবর্ণজয়ন্তীতে তাদের স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেই কোনও বিশেষ আয়োজন-কর্মসূচি।

সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়ার কর্মসূচি ছাড়া আর কোনও বিশেষ কর্মসূচি নেই বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মহিউদ্দিন।

আরও পড়ুন: জাবি ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, এক ভর্তিচ্ছুর ৬ মাসের কারাদণ্ড

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র প্রশাসনিক ভবনে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি কালো পতাকা উড়ানো হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ভবন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংলগ্ন অফিসে কোনও ধরনের পতাকাই উড়ানো হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন আচরণে হতাশা প্রকাশ করেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এরকম আচরণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খারাপ বার্তা বহন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আজকে এসে দেখলাম এরকম বিশেষ একটি দিবসের কোনও স্মারক নেই। এখানের কর্তৃপক্ষ যেসব বিষয়ের সাথে স্বার্থ আছে- উন্নয়নের কাজ, ভবন নির্মাণ এগুলোর ব্যাপারে যতটা আগ্রহ, অন্যান্য বিশেষ কাজ- একাডেমিক, কৃষ্টি-কালচারের ব্যাপারে তাদের কোনও আগ্রহ নেই।

বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বড় পরিসরে ছবি প্রদর্শনী, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা যেতো বলে মনে করেন রায়হান রাইন।

আরও পড়ুন: জাবিতে ৭ ছাত্র হত্যা, একটিরও বিচার হয়নি

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনও আয়োজন না থাকাকে কর্তৃপক্ষের ‘অকৃতজ্ঞতা’ বলে উল্লেখ করেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি রাবিবুল রনি।

তিনি বলেন, বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লাল-সবুজ আলোতে ছেয়ে ফেলেছে পুরো ক্যাম্পাস, কিন্তু বিজয় এলো যাদের ত্যাগের বিনিময়ে, তাদের ভুলে যাওয়া অকৃতজ্ঞতা, বেমানান ও দৃষ্টিকটু। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস তরুণদের সামনে তুলে ধরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আমাদের সকলের অবশ্যপালনীয় কর্তব্য বলেই মনে করি।

আরও পড়ুন: জাবিতে ১৪০তম হলেন ডেন্টালে প্রথম হওয়া রাহাদ

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, নিবন্ধক ও দুই উপ-উপাচার্যকে কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরও তারা ফোন ধরেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারের কাছে বুদ্ধিজীবী দিবসে কেনো বিশেষ আয়োজন নেই জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

তবে সন্ধ্যা ৭টায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে শহীদ মিনারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ