করোনা: রাবির পরীক্ষা নিয়ে ধোঁয়াশায় শিক্ষার্থীরা

করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে
করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে  © ফাইল ফটো

রাজশাহীতে হঠাৎ করোনার বিরূপ প্রাদুর্ভাব এবং চলমান লকডাউনের ফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আটকে থাকা পরীক্ষা নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে, আগামী ২০ জুন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব স্ব বিভাগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি অধিকাংশ বিভাগ।

এদিকে পরীক্ষার সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে রাজশাহীতে আসতে শুরু করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে পরীক্ষার বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা। রাজশাহীতে চলমান লকডাউনে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন পরীক্ষা দিতে আসা অনেক শিক্ষার্থী।

এ নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করতে দেখা গেছে তাদের। রাজশাহীর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই মুহুর্তে পরীক্ষার হলে বসতে অসম্মতি প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীকে।

এ বিষয়ে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ড. আজিজুর রহমান জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে প্রশাসন। সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রত্যেক বিভাগ আগামী ২০ জুন থেকে তাদের সুবিধা মতো পরীক্ষা নিতে পারবে। কখন, কীভাবে এই পরীক্ষা নিলে সুবিধা হবে তা কেবল স্ব স্ব বিভাগের কর্তৃত্ব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘রাজশাহীতে করোনার বিরূপ পাদুর্ভাবের ফলে এখন পর্যন্ত পরীক্ষার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরই একটা সিদ্ধান্তের কথা ভাবছি।’

পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ নিরসনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। কিন্তু হঠাৎ রাজশাহীতে লাগামহীন করোনার প্রকোপ ইতিমধ্যে হতাশ করেছে সকলকে। এ অবস্থায় সকলের সুরক্ষা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরীক্ষা নেওয়া খুবই দূরহ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তবে আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।’ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, করোনাকেই পরীক্ষার নেওয়ার অন্যতম প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগের সভাপতি। তারা সকলেই পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। তবে হঠাৎ রাজশাহীতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে এই মুহুর্তে ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নন তারা। কেননা শিক্ষার্থীদের ডেকে নতুন করে ঝুঁকিতে ফেলার পক্ষে নয় কোনো বিভাগ।

তবে অবস্থার উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরীক্ষা শুরু করার কথা জানানোর পাশাপাশি এই সময়টা সকল শিক্ষার্থীকে ধৈর্য ধারণ করে নিজ বাড়িতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত ৩ জুন শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন এবং বিশ্বিবদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা অনুসারে আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহার সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য, ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক সভায় আগামী ২০ জুন থেকে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষ এবং ৪ জুলাই থেকে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ