৩০ জুনের মধ্যে পেনশন স্কিম বাতিলে আল্টিমেটাম ঢাবি শিক্ষক সমিতির

মানববন্ধন
মানববন্ধন  © টিডিসি ফটো

৩০ জুনের মধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যাহার না করা হলে আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত রাখা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। রোববার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে থেকে এ আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়।

মানববন্ধনের অংশ নিয়ে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি আজকে এই মানববন্ধন পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য জারিকৃত প্রত্যয় স্কিম নামে যে পেনশন স্কিম সেখানে অনেকগুলো সুযোগ সুবিধা কর্তন করা হয়েছে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই এই স্কিমকে গ্রহণ করতে পারেনি। তাই তারা নতুন এ পদ্ধতি বাতিলের দাবি তুলেছেন।

অধ্যাপক নিজামুল হক বলেন, দাবি না মানা হলে পর্যায়ক্রমে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো। এ পেনশন স্কিম বাতিলে ১ হাজার ৬১ জন শিক্ষক স্বাক্ষর দিয়েছেন।  তারা কেউ এই ধরনের বৈষম্যমুলক স্কিম গ্রহণ করবেন না। শিক্ষকরা আত্মপরিচয়, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচেন। সেটি যখন সমস্যায় তখন আমাদের এমন প্রতিবাদ করতে হয়। যারা আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই তাদের দিকে বিশেষ নজর দেবে।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, এই পেনশন স্কিমে পারিবারিক সুরক্ষাবলয়কে কর্তন করা হয়েছে। মেধাবী যারা আসবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে, তাদেরকে আমরা আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে খুঁজে পাবো কি না জানি না। আজ মানববন্ধন করছি, যদি আমাদের দাবি আগামীকালের মধ্যে মেনে নেয়া না হয় আমরা আগামী ২৮ মে সকাল ১০টা থেকে ১২টা অবধি ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করব।

তিনি বলেন, দাবি না মানা হলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সকল শিক্ষকের ম্যান্ডেট নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। যদি ৩ জুনের মধ্যে সমস্যা সমাধান না হয় তাহলে আমরা আগামী ৪ জুন আবারও শিক্ষকরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অর্ধবেলা কর্মবিরতি পালন করবো। তবে এসব কর্মসূচিতে পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। যেহেতু জুন মাসে বাজেট হবে, তাই আমরা জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। এ সময়ের মধ্যেও যদি দাবি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়া বলেন, আজকে প্রত্যয় স্কিমের বিরুদ্ধে সমগ্র দেশব্যাপী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাজপথে নেমে এসেছেন। তাদেরকে রাজপথে নামিয়ে আনাই কি প্রত্যয় স্কিমের উদ্দেশ্য? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদরা একটি সমীক্ষা করেছেন, সেখানে দেখানো হয়েছে এই প্রত্যয় স্কিম কীভাবে শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

অধ্যাপক শফিউল আলম বলেন, বলা হচ্ছে পহেলা জুলাইয়ের পরে যাদের নিয়োগ হবে তাদের জন্য এটি কার্যকর হবে। কিন্তু তারা হয়ত জানেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা প্রমোশন হচ্ছে নতুন নিয়োগ। স্কিমটি এখন পর্যন্ত যে অবস্থায় আছে সেক্ষেত্রে প্রতি নিয়োগেই এই স্কিম বাস্তবায়িত হবে। আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলেছেন এই নীতি বাস্তবায়িত হলে ঢাবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আর্থিকভাবে বঞ্চিত হবেন।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল বাছির, সাবেক প্রক্টর গোলাম রাব্বানী, বর্তমান প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আব্দুস সামাদ, জসীম উদদীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহীন খানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

 

সর্বশেষ সংবাদ