স্থায়ী তিন সদস্য ছাড়াই চলছে ইউজিসি, কার্যক্রমে স্থবিরতা
- আহমেদ ইউসুফ
- প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ PM , আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ PM
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউসিজি) পূর্ণকালীন পাঁচ সদস্যের পদ থাকলেও শূন্য রয়েছে তিনটি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কমিশনের সদস্য ও অতিরিক্ত চেয়ারম্যানের পদত্যাগের পর শূন্য হয়ে পড়ে পদগুলো। পরে গত ৫ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে এবং ১২ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিমুদ্দিন খান ও ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে সদস্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
তবে দীর্ঘদিন বাকি তিন সদস্য নিয়োগ না হওয়ার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নিয়মিত কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা ছিল কমিশনের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। তবে সম্প্রতি এ কাজটি বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাস্তবিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার সুযোগ নেই ইউজিসির।
নতুন অথরিটি আসার পরে ইউজিসির সর্বোচ্চ স্তরের ফুল কমিশন মিটিং হয়নি। যদিও কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো এই মিটিংয়ের মাধ্যমে পাশ হয়ে থাকে। ইউজিসির সূত্রে জানা যায়, কমিশনের তিনজন স্থায়ী সদস্যের পদ শূন্য থাকায় এই মিটিং আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এর বাইরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জনবলের বরাদ্দের চাহিদা থাকলেও কমিশন থেকে পাশ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এছাড়া একই সদস্যকে একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব দেয়ায় কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এর বাইরে বেরসাকরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন বিভাগ চালুর আবেদন থাকলেও অনুমোদন হয়নি।
এরমধ্যে গত ১৪ অক্টোবর এক অফিস আদেশে চেয়ারম্যান ও দুই সদস্যের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। এতে কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজকে অর্থ ও হিসাব বিভাগ, রিসার্চ সাপোর্ট এন্ড পাবলিকেশন বিভাগ, ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন এন্ড ট্রেনিং বিভাগ, স্ট্র্যাটেজিক প্লানিং এন্ড কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স বিভাগ, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগ এবং BdREN বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানকে দেয়া হয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ক্রস বর্ডার হায়ার এডুকেশন শাখা এবং বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত হাইয়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন এন্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রজেক্ট। কমিশনের অপর সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে দেওয়া হয় সচিবালয় ও প্রশাসন বিভাগ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ, জেনারেল সার্ভিসেস, এস্টেট এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পরিচালিত ইম্প্রুভিং কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রজেক্টের দায়িত্ব।
ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, আমাদের উপর খুব প্রেশার হয়ে যায়, কিন্তু আমরা সামলে নেয়ার চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি, শীঘ্রই আমরা সদস্য পেয়ে যাব। সরকারও বিষয়টি নিয়ে আন্তরিক বলে বিশ্বাস করি। সব ধরনের কার্যক্রম চাইলেও একা করা সম্ভব নয়। এতদিন সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি ও প্রোভিসি নিয়োগ নিয়ে ব্যস্ত ছিল এখন সেটা অনেকটা সম্পন্ন হয়েছে। সকল বিভাগের দায়িত্ব আমরা কোনোভাবে ম্যানেজ করলেও শীঘ্রই সদস্য নিয়োগ দেয়াটা জরুরি।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর ইউজিসির পূর্ণকালীন সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ঢাবি অধ্যাপক ড. হাসিনা খান। এছাড়া ৮ সেপ্টেম্বর পূর্ণকালীন সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন কুয়েট অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর, জবি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন এবং ইউল্যাবের অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন। তার আগে গত আগস্টের ৩১ তারিখে মেয়াদ শেষ করেন আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।