কৃষি গুচ্ছের উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ ভর্তিচ্ছুদের

লোগো
লোগো  © ফাইল ছবি

আটটি সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত এ ফলের উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ভর্তিচ্ছুদের একাংশ। তারা বলছেন, যে প্রশ্নে তারা পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন এবং যে পরিমাণ নম্বর পাবেন বলে প্রত্যাশা করেছেন—কোনোটিই কোনোটির ধারে-কাছেও নেই। আবার কেউ কেউ অনুপস্থিত থেকেও মেরিট লিস্টে এসেছেন। অনিয়ম-অসঙ্গতির ফলেই এমনটি হয়েছে।

ভর্তিচ্ছুদের একাংশের অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ বলছে, কোনো শিক্ষার্থীর যদি প্রকাশিত ফল নিয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ থাকে তাহলে তারা লিখিত দিতে পারেন। আমরা তাদের অভিযোগ মূল্যায়ন করবো। আগের বছরগুলোতেও এ ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।

একাধিক ভর্তিচ্ছু দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের অফিসে ফোন করে বলেন, পরীক্ষায় তারা যে পরিমাণ প্রশ্নের সঠিক উত্তর করেছেন সে পরিমাণ নম্বর তারা পাননি। যে পরিমাণ নম্বর তারা প্রত্যাশা করেছিলেন সেটা না পাওয়ায় অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। মূলত তারা কৃষি গুচ্ছের প্রকাশিত এ ফল পুনঃমূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।

প্রকাশিত ফলে অভিযোগ তুলে শান্তা জাহান নামে একজন ভর্তিচ্ছু বলেন, কৃষি গুচ্ছের পরীক্ষায় আমি ৭১টা প্রশ্নের উত্তর করেছি। যে প্রশ্নগুলো শতাভাগ ঠিক ছিল। এরপরেও নেগেটিভ ধরলে ৬৬+ থাকার কথা। কিন্তু আমি এখন ওয়েটিং লিস্টেও নেই। অথচ ৭১.২৫ এসপেক্টড হয়েও ১২৬৪তম পজিশন আবার ৭৩.২৫ এসপেক্টড হয়েও ১০৬৫ পজিশন। তাই ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করা হোক।

নাহিদ হোসাইন নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, এ ফলাফল মেনে নেয়া যায় না। পরীক্ষা দিয়ে মিলিয়ে দেখেছি ৭৪ আসে। কিন্তু রেজাল্টে সিরায়াল দেখায় ৯০২৩! এটা কিভাবে সম্ভব। এতোগুলো স্টুডেন্টের জীবন নিয়ে খেলতেছেন উনারা। প্রকাশিত এ ফলাফলে অসঙ্গতি রয়েছে।

আরও পড়ুন: কৃষি গুচ্ছের ফল প্রকাশ

জাহিদ আশিকুর রহমান বলেন, কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর মিলিয়ে ৬৩+ মার্কস আসে। কিন্তু আমার কোথাও রোল আসেনি। ওয়েবসাইটে লিখা আপনি ভর্তির জন্য বিবেচিত হননি। আমার রোল ৫১৮০১। কিন্তু আমার বাঁ পাশের যার আসন ছিল তার রোল ছির ৫১৮০০। সে অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি তার রোল ওয়েটিং লিস্টে আসছে। 

এবারে পরীক্ষায় ২০১৭ সালের মাধ্যমিক ও ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চলতি বছরের আবেদন যোগ্য প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এবারে আবেদনের যোগ্যতা ছিল সর্বমোট ন্যূনতম ৮.৫। এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইংরেজিতে ১০, প্রাণীবিজ্ঞান ১৫, উদ্ভিদবিজ্ঞান ১৫, পদার্থবিজ্ঞান ২০, রসায়ন ২০ ও গণিতে ২০ নম্বরের রাখা হয়েছে।

ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগ নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২১-২২ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর এমন একটি শ্রেণী থাকেন। আমরা তাদের জন্য দরজা খোলা রেখেছি, ফল নিয়ে কারো কোন অভিযোগ থাকলে তারা আমাদের লিখিত দিতে পারেন।

ফল পুনঃমূল্যায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অধ্যাপক শহীদুর রশীদ বলেন, দেখি আমর একটি সভা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করবো। বিগত বছরগুলোতেও ফল পুনঃমূল্যায়নের পদ্ধতি ছিল। ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেটি অনুসরণ করবো।

পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও তালিকায় আসার ব্যাখ্যায় শেকৃবি উপাচার্য বলেন, অনেক ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার আগে আবেদন করেছেন, তিনি যে কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন সে কেন্দ্রে অংশ নিতে চাচ্ছেন না। তাকে তার পরবর্তী আবেদনের ভিত্তিতে নতুন কেন্দ্র দেয়া হয়েছে। এতে করে মনে হয়েছে তিনি অনুপস্থিত। আসলে তিনি অন্য কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এ নিয়ে ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগ অমূলক।


সর্বশেষ সংবাদ