সৌদি আরবের একদিন পর কেন বাংলাদেশে ঈদ পালিত হয়?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ AM , আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ AM

পৃথিবী নিজ অক্ষের চারদিকে পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তিত হয়ে থাকে, যাকে ভৌগোলিক ভাষায় আহ্নিক গতি বলা হয়। এন্টি-ক্লকওয়াইজ (ঘড়ির সময়ের বিপরীত) দিকে লক্ষ্য করলে পৃথিবীর গতিবিধি সহজে বোঝা যায়। অন্যদিকে, চাঁদ ধীরে ধীরে তার নিজ অক্ষে আবর্তিত হতে থাকে। এর ফলে, পশ্চিমা দেশগুলোতে চাঁদের আলোর উপস্থিতি পূর্বের দেশগুলোর চেয়ে আগে দেখা যায়, কারণ সূর্য পূর্ব দিক থেকে উদিত হয় এবং চাঁদ ঠিক তার বিপরীত দিকে চলে।
একটি দেশের ভেতরে চাঁদ দেখা গেলেও, অন্য দেশে তা নাও দেখা যেতে পারে। কারণ, চাঁদ দেখার জন্য সূর্য এবং চাঁদের মধ্যে ১০.৫ ডিগ্রি কোণ প্রয়োজন হয়। সূর্যের সময় অনুযায়ী, যেখানে সময়ের পার্থক্য ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা হতে পারে, চাঁদের জন্য এই কোণ উৎপন্ন হতে প্রায় ১৮-২০ ঘণ্টা সময় লাগে, যা প্রায় একদিনের সমান। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত চন্দ্র এবং সূর্যের মধ্যে ১০.৫ ডিগ্রি কোণ উৎপন্ন না হবে, ততক্ষণ চাঁদ খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়।
এটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, সৌদি আরব—পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে প্রায় ৩ ঘণ্টার পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কেন সৌদি আরবের একদিন পরে বাংলাদেশে ঈদ পালন করা হয়?
বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৪,৫৮৭ কিলোমিটার। সৌর সময় অনুযায়ী, বাংলাদেশ সৌদি আরবের চেয়ে ৩ ঘণ্টা এগিয়ে থাকলেও চন্দ্র সময়ের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সৌদি আরবের থেকে ২১ ঘণ্টা পিছিয়ে থাকে। সৌর সময়ের হিসাব অনুসারে, বাংলাদেশ সৌদি আরবের একদিন পরে চাঁদের আলো দেখতে পায়। তবে চন্দ্র সময়ের হিসাব করলে, বাংলাদেশ এবং সৌদি আরব একইদিনেই ঈদ এবং রোজাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকে।
এটি দেখায় যে, পৃথিবীর সকল মুসলিম দেশের মাঝে চন্দ্রবর্ষ অনুযায়ী উৎসব পালন হয়। আর, শুধু টাইমজোনের পার্থক্য এবং সৌর সময়ের হিসাবের কারণে আমাদের উৎসব কিছুটা আলাদা সময় ধরে চলে, যদিও আসলে সব দেশের জন্য তা একই চন্দ্রদিবসে পালন হয়।