চট্টগ্রাম কলেজের ১৫৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা
- ছাবিহা জামান
- প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২২ PM , আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৯ PM
যেখানে পাহাড় ও সমুদ্র একসঙ্গে বাস করে। যেখানে আকাশ হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায়, তা চট্টগ্রাম। এই চট্টগ্রামের বুকে ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম কলেজ। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) প্রতিষ্ঠার ১৫৫ বছর পেরিয়ে ১৫৬ তম বছরে পদার্পন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে নানা আঙ্গিকে। নতুন বছর ও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। চট্টগ্রাম কলেজ দিবসে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাগুলো তুলে ধরেছেন চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী ছাবিহা জামান।
‘বিশ্ব নাগরিক গড়ে তোলার কান্ডারী হয়ে উঠুক চট্টগ্রাম কলেজ’
বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ ‘চট্টগ্রাম কলেজ’ দীর্ঘ পথচলায়, অসংখ্য শ্রেষ্ঠ মানব গড়ে তুলেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আদর্শ মানুষ গড়ার কারিগর। প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন সময়, বিশ্ব নাগরিক হয়ে উঠার। আমার প্রত্যাশা, শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার সর্বাত্নক সহোযোগিতা করবে চট্টগ্রাম কলেজ। এক্ষেত্রে প্রয়োজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
পাঠ্য বইয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে সৃজনশীল মেধা বিকাশের সুযোগ করে দেয়া প্রয়োজন এবং সৃজনশীল জ্ঞান চর্চায় রাজনৈতিক অপশক্তি ক্যাম্পাসে যেন বিরোধীতার পরিবেশ সৃষ্টি না করে সেদিকে সচেতন থাকা প্রতিষ্ঠানের কর্তব্য। ফ্রিল্যান্সিংসহ ক্যারিয়ার গঠনে নানাবিধ সেমিনার আয়োজন করলে ফলপ্রসূ হবে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে নিয়মিত কাউন্সিলিং ব্যবস্থা রাখতে পারলে তা শিক্ষার্থীদের হতাশামুক্ত জীবন গঠনে সহায়ক হবে। সবাই একসঙ্গে এগিয়ে গেলে, এগিয়ে যাব আমরা, এগিয়ে যাবে দেশ। সুনাম ছড়িয়ে যাবে আমার প্রিয় বিদ্যাপীঠ, চট্টগ্রাম কলেজের।
মরিয়ম খানম সেতু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
'আধুনিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই'
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ও ঐতিহ্যবাহী কলেজ চট্টগ্রাম কলেজ। প্রতিষ্ঠার ১৫৬ বছরে পদার্পণ করলেও কলেজটির নেই নিজস্ব বাস সার্ভিস, ক্যান্টিন ও পর্যাপ্ত ছাত্র বা ছাত্রী নিবাস। ফলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত এবং থাকার ক্ষেত্রে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়।
শিক্ষার্থীরা পূর্বে বিভিন্ন হেনস্তার শিকার হলেও স্বৈরাচার পতনের পর প্রাণ খুলে নিঃস্বাস নিতে পারছে ক্যাম্পাসে। আমার প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের সেই স্বস্তির নিঃস্বাস যেন চাপা না পরে। শিক্ষার্থীরা যেন স্বাধীন ও নিরাপদ ভাবে ক্যাম্পাসে চলতে পারে।'
নাদিয়া সুলতানা, বাংলা বিভাগ,
'আধুনিক ও উন্নত ক্যাম্পাসে পরিণত হোক প্রিয় বিদ্যাপীঠ'
বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের এতিহ্যবাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ। এই কলেজের আয়াতন ৬ একর। এটি বাংলাদেশের প্রাচীন কলেজ সমুহের মধ্যে একটি। এই কলেজের অনেক সুনাম এবং ঐতিহ্য রয়েছে। সেই প্রিয় কলেজ ১৫৬ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে। আগামীদিন গুলোতে আমার প্রত্যাশা কলেজ কর্তিপক্ষ ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করবে। মেডিকেল সেন্টারে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করবে, ক্রীড়া সরঞ্জাম বাড়িয়ে এবং দক্ষ ক্রীড়া শিক্ষকের মাধ্যমে কলেজের ক্রীড়াঙ্গণকে আরও সমৃদ্ধ করবে। স্বাস্থ্যসম্মত ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করবে এবং অপরাজনীতি নিষিদ্ধ করে, আদর্শিক রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
মোহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগ
'আলোকিত ভবিষ্যতের প্রত্যয়ে এগিয়ে যাক প্রাণের বিদ্যাপীঠ'
১৫৬ বছরে পদার্পণ করছে অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম কলেজ। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার পর এবার ভিন্ন আলোকে উদযাপিত হয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ দিবস। মুক্ত চিন্তার বিকাশ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কেন্দ্র প্রাণের চট্টগ্রাম কলেজ। দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চায় চট্টগ্রাম কলেজ এর অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ক্রীড়া ও শিক্ষা সংস্কৃতির নানা বিভাগে চট্টগ্রাম কলেজ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। দেশের সনামধন্য এই বিদ্যাপীঠ তার স্বকীয়তা নিয়ে মাথা উঁচু করে অবস্থান করুক বিশ্ব মানচিত্রে। প্রত্যাশা রাখি সব ধরনের অপসংস্কৃতি, অন্যায়, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি নিরসনে প্রাণের বিদ্যাপীঠ এগিয়ে যাবে। জ্ঞান ও আলোর পথের অভিযাত্রায় চট্টগ্রাম কলেজ একটি নতুন দিগন্ত তৈরি করবে।
সুমাইয়া গণি শেফা, বাংলা বিভাগ