কার্যক্রম চললেও লাল তারকা চিহ্ন নেই ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডি ক্যাম্পাস
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডি ক্যাম্পাস  © ফাইল ছবি

অননুমোদিত ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, ব্যাংকে টাকা পরিশোধ, সমাবর্তনের জন্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও লাল তারকা চিহ্ন তুলে  দেয়া হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। 

গত ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ওয়েবসাইটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় গিয়ে দেখা যায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন নেই।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বলছে, অননুমোদিত ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করায় লাল তারকা চিহ্ন তুলে দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালনা করা হলেও অন্যান্য সকল কার্যক্রমই ধানমণ্ডির ভাড়া ক্যাম্পাসে পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তি থেকে শুরু করে টিউশন ফি জমা দেয়া, বিভিন্ন বিভাগের অফিসও খোলা রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ভিসি-ট্রেজারার নেই ৬৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৮৫টিতে নেই প্রো-ভিসি

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে দুই দফায় টিম পাঠানো হয়েছিল। ওই টিমের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাল তারকা চিহ্ন তুলে দেয়া হয়েছে।

যদিও ইউজিসির একটি সূত্র বলছে, অননুমোদিত ক্যাম্পাসে ভর্তি কার্যক্রম কিংবা অফিস পরিচালনা করা যাবে না । এটি করা হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইন সে আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি লাল তারকা চিহ্নিত হবে। তবে ইউজিসি সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দের বক্তব্য প্রসঙ্গে ওই সূত্র কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

সরেজমিনে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমণ্ডি ক্যাম্পাসগুলো ঘুরে করে দেখা যায়, সেখানে ক্লাস না হলেও বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে ধানমণ্ডি-২৭ এর সোবহানবাগ মসজিদের বিপরীত দিকে ড্যাফোডিল টাওয়ার-৫ এর নিচতলায় শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। এডমিশন অফিসে শিক্ষার্থীরা ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য পাচ্ছেন। এখানে শিক্ষার্থীদের ভর্তিও করা হচ্ছে। এই বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলায় সাংবাদিকতা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ ও আইন বিভাগের অফিস এখনও চলছে। ​অফিসের কো-অর্ডিনেটর অফিসাররা এখানেই অফিস করছেন। নবম সমাবর্তনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের গাউন বিতরণের কাজও এখান থেকেই করা হবে।

আরও পড়ুন: জুনিয়রদের দিয়ে কনডম বিক্রি, র‍্যাগিংয়ের দায়ে ৩ ছাত্র বহিষ্কার

​ধানমন্ডি-৩২ এর পাশাপাশি দুটি বিল্ডিংয়ের একটির নিচতলায় অ্যাকাউন্ট অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের টিউশন ফি পরিশোধ করা, টাকা জমা দেয়ার পর বিভিন্ন ধরনের ক্লিয়ারেন্স নেয়ার কাজ এখান থেকেই সাড়ছেন। একই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় বিশ্ববিদ্যালয়টির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। এখানেও বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চোখে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালটির নবম সমাবর্তন নিয়ে দায়িত্বরত অফিসারদের বেশ ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।

শিক্ষার্থী পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভর্তি অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের ক্লাস কার্যক্রম ধানমন্ডি ক্যাম্পাসে হচ্ছে না। তবে আমরা এখানে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আপনি চাইলে এখানে টাকা পরিশোধ করে ভর্তি হতে পারবেন।

এসব বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়টির  উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেয়া হলে অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয় ‘স্যার অনেক ক্লান্ত, বাসায় ঘুমাচ্ছেন। মোবাইল অফিসে রেখেই চলে গেছেন।’

আরও পড়ুন: দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বিরুদ্ধে সনদ বিক্রির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এসএম মাহবুব-উল-হক মজুমদার ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনার যে অভিযোগ ছিল সেটি এখন আর নেই। আমরা দুইবার ধানমন্ডিতে তাদের ক্যাম্পাস পর্যবেক্ষণ করেছি। তবে সেটি এখন আর নেই। তাই লাল তারকা তুলে নেয়া হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ