রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্লাস বন্ধ, ঘটনার নেপথ্যে

স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র নতুন ও পুরোনো ক্যাম্পাস
স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র নতুন ও পুরোনো ক্যাম্পাস  © সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে প্রশাসনিক কার্যক্রম চলবে। দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্বের জেরে আগেই গঠিত তদন্ত কমিটির আকার বড় করে দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে সংঘরর্ষে অন্তত ২৫ শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে দুই জনকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দু’জনের মধ্যে একজনের রাতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাদের অবস্থা এখন ভালোর দিকে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইসিইউতে থাকা দুই শিক্ষার্থী হলেন- মামুন ও রাফি। আহত অন্যদের অবস্থা গুরুতর না হওয়ায় তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসের সিট দখল নিয়ে কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এ নিয়ে শনিবার সংঘর্ষে জড়ায় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর সিট দখল নিয়ে প্রথমবারের মতো হাতাহাতি হয় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

একাধিক সূত্র বলছে, স্টেট ইউনিভার্সির রাজধানী জিগাতলা এলাকার পুরোনো ক্যাম্পাস এবং রূপগঞ্জের নতুন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মধ্য মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব চলছিল দীর্ঘদিন। গত ৪ সেপ্টেম্বর ক্লাস শেষে আইন, সিএসই ও ফার্মেসী বিভাগের জিগাতলা এলাকার শিক্ষার্থীরা বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সিট পাওয়া নিয়ে সিএসই ও আইনের শিক্ষার্থীদের কথা কাটাকাটি হয়।

এ সময় পাশে থাকা ফার্মেসীর শিক্ষার্থীরা আইনের শিক্ষার্থীদের অতর্কিত মারধর শুরু করেন। দুই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব এতে ভূমিকা রেখেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। পরে গত ৮ সেপ্টেম্বর আইনের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এলে তাদের ওপর হামলা চালায় ফার্মেসীর শিক্ষার্থীরা। 

ঘটনার পর আইনের ক্লাস বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। সাতদিন ধরে অনলাইনে ক্লাস চলছিল। শনিবার তারা অফলাইনে ক্লাস করতে এলে তাদের চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ফার্মেসীর শিক্ষার্থীরা। পরে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও পারেনি কর্তৃপক্ষ। এরপর দফায় দফায় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।

আরো পড়ুন: স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত ২৫, আইসিইউতে দুই

স্টেট ইউনিভার্সিটির মার্কেটিং ও জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুক তারেক রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শনিবারের ঘটনার পর কমিটিতে আরও চারজনকে যুক্ত করে দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ থাকবে। আইসিইউতে থাকা শিক্ষার্থীদের অবস্থা এখন ভালো। তাদের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. চৌধুরী মফিজুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা দোষী, তারা অবশ্যই শাস্তি পাবেন। আপাতত ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর ক্লাস শুরুর বিষয়টি নির্ভর করছে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বহন করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ