সেই প্রাইভেট কারে ছিলেন নর্থ সাউথের মাতাল জুটি, দেওয়া হয় মাদক আইনে মামলা

ঢামেকে নেওয়ার পর এক পর্যায়ে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খায় ওই তরুণী (ইনসেটে)। ডানে সেই জুটি (কালো জামা পরিহিত তরুণটি)
ঢামেকে নেওয়ার পর এক পর্যায়ে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খায় ওই তরুণী (ইনসেটে)। ডানে সেই জুটি (কালো জামা পরিহিত তরুণটি)  © সংগৃহীত

রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে বেপরোয়াভাবে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল একটি প্রাইভেট কার। পরে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মোড়ে সেই গাড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় একটি তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় হেফাজতে নেয়া হয় সেই প্রাইভেটকারের চালককে। সেসময় তাদের পরিচয় না জানলেও পরে তাদের পরিচয় এবং প্রাইভেট কারে অচেতন হওয়ার কারণ জানা গেছে। প্রাইভেটকারে থাকা তরুণ-তরুণী উভয়েই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। 

জানা যায়, গতকাল রবিবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৮টায় যখন রামপুরা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে তখন তারা অতিরিক্ত মদ পান করেছিলেন। যার ফলে তারা একটি মোটরসাইকেল ও একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। পরে সেখান থেকে তারা দ্রুত যাওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু মোটরসাইকেলের চালক তাদের পিছু নেয়। এক পর্যায়ে মালিবাগ সিগন্যালে গাড়িটি থামলে লোকজন তাদের আটকে ফেলে। 

আরও পড়ুন: পালাতে থাকা প্রাইভেট কারের মধ্যে সহপাঠীর সঙ্গে অচেতন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী

ওই সময় ড্রাইভিং সিটে চুপচাপ বসেছিলেন তরুণ চালক। তার পাশের আসনে পা রাখার জায়গায় অচেতন হয়ে পড়েছিলেন এক তরুণী। সেই তরুণীর ছিল না কোনো সাড়াশব্দ। পরে ওই গাড়িসহ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। 

কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়ার পর ওই তরুণী হঠাৎ করে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও চিকিৎসককে গালাগালি করতে থাকে। 

শুধু তাই নয়, পুলিশের অনুরোধে চিকিৎসক যখন তাদের স্টমাক ওয়াশ করতে বলেন তখন শুরু হয় প্রবল মাতলামি। কিছুতেই স্টমাক ওয়াশ করবেন না তারা। এসময় ঢামেকের জরুরি বিভাগের টিকিটও ছিঁড়ে ফেলেন তারা। তাদেরকে নিয়ে আসা পুলিশ ও আনসারদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খায় ওই তরুণী। 

এভাবে ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে যাবার পর অবস্থা বেগতিক দেখে ঢামেকের পুলিশ ফাঁড়ির সহ-ইনচার্জ মাসুদ মিয়া শাহবাগ থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। পরে রামপুরা থানার মহিলা পুলিশ এসে তাদেরকে থানায় নিয়ে যায়। 

রামপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে তারা বিভিন্ন গাড়িতে ধাক্কা দিয়েছে। তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল, বিভিন্নজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে, পুলিশের সঙ্গেও তারা গালিগালাজ করছে। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানেও তারা গালাগালি করেছে। কতটুকু পরিমাণ মদ খেলে কি হতে পারে সে ব্যাপারেও তারা জানত না। এরপর সড়কে মদ খেয়ে মাতলামি করায় সেই তরুণ তরুণীকে মাদক আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।

জানা যায়, রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজল সাহা বাদী হয়ে গতকাল দিবাগত রাত দুইটায় এই মামলা করেন। ওই মামলায় দুজনকে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেছিল পুলিশ। অপর দিকে আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। ঢাকার আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পরীক্ষায় ওই তরুণ–তরুণীর মদ্যপানের প্রমাণ পেয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ