টিকটকে ভাইরাল হতে বনে আগুন দিলেন তরুণী!

টিকটকার হুমাইরা আসগর
টিকটকার হুমাইরা আসগর  © সংগৃহীত

‘আমি যেখানে যাই, সেখানেই আগুন জ্বলে’। বনে আগুন ধরিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে এমনই এক টিকটক ভিডিও বানিয়েছেন পাকিস্তানি টিকটকার হুমাইরা আসগর। নানা ইফেক্ট ব্যবহার করে সিনেমার অংশের মতো করে বানানো সেই ভিডিও আবার তিনি আপলোড করেছেন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। কিন্তু ভাইরাল হওয়ার জন্য বনাঞ্চল ধ্বংসকে ভালোভাবে নেয়নি পাকিস্তানিরা। দেশটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে সমালোচনার ঝড়। এ খবর দিয়েছে আল-অ্যারাবিয়া। 

খবরে জানানো হয়, হুমাইরার রয়েছে এক কোটি ১০ লাখ ফলোয়ার। তবে এই ফলোয়াররাই এখন তার নিন্দা জানাচ্ছেন। কেউ কেউ তাকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছেন। কয়েকদিন আগেই এক টিকটক ভিডিওর জন্য দুই যুবক পাকিস্তানের মারগাল্লা পাহাড়ের জঙ্গলে আগুন দিয়েছিল। সে সময় সে ভিডিও ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের জন্ম দেয়

ভিডিওতে এক টিকটকারকে গ্যাসলাইট দিয়ে জঙ্গলে আগুন দিতে দেখা যায়। ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডের জন্য বনে আগুন দেয়ায় এক যুবককে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। 

সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। দেশের বেশকিছু এলাকার তাপমাত্রা ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে  গেছে। একাধিক জায়গায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। দেশের দরিদ্র মানুষ কঠিন লড়াই করছে বেঁচে থাকার জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কোথায় হিমবাহ গলে গেছে। কোথাও আবার দাবানল তৈরি হয়েছে। এসব কারণে এ ধরনের ভিডিও নিয়ে মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে।

যদিও হুমাইয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি নিজে ওই আগুন লাগাননি এবং এই ভিডিও বানানোয় কারও কোনো ক্ষতি হয়নি। ওই ফুটেজটি টিকটক থেকে ডিলিট করে দেয়া হয়েছে। 

ইসলামাবাদ ওয়াইল্ডলাইফ ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের চেয়ারপার্সেন ও পরিবেশ কর্মী রিনা সইদ খান সাট্টি বলেছেন টিকটর স্টারের ছবি তোলার থেকেও অনেকবেশি জরুরি ছিল আগুন নেভানোর জন্য এক বালতি পানির ব্যবস্থা করা। তিনি আরও বলেন এই ভিডিওগুলো খুবই খারাপ বার্তা দিচ্ছে জনগণকে। পরিবেশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, টিকটকে একটি বিরক্তিকর ও সর্বনাশা প্রবণতা শুরু হয়েছে। এই গরম ও শুষ্ক মৌসুমে ফলোয়ার পেতে মরিয়া তরুণ-তরুণীরা জঙ্গলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে! 

অস্ট্রেলিয়ায় জঙ্গলে আগুন দিলে যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধানের কথা উল্লেখ করে তিনি দাবি জানিয়েছেন, পাকিস্তানেও এ ধরনের আইন করা হোক। রিনার মতে, এসব মানসিক বিকারগ্রস্ত তরুণদের অবিলম্বে কারাগারে পাঠাতে হবে। এ কারণে এ ধরনের ঘটনার কোনো তথ্য থাকলে তা দ্রুত পাকিস্তান বন্যপ্রাণী বোর্ডকে জানানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ