রাতের খাবার: কখন, কীভাবে, কী খাবেন?

রাতের খাবার
রাতের খাবার  © সংগৃহীত

রাতের খাবার কী হবে—এই প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘোরে, বিশেষ করে যাঁরা স্বাস্থ্য ও ওজন নিয়ে চিন্তিত। দিনের অন্যান্য বেলার তুলনায় রাতের খাবারের প্রতি একটু বেশি সতর্কতা দরকার। কারণ, রাতে খাওয়ার পর শরীর বিশ্রামে চলে যায়, ফলে অতিরিক্ত খাবার সহজে চর্বিতে পরিণত হয় এবং শরীরে মেদ জমে। লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট ‘বোল্ডস্কাই’-এর তথ্যমতে, রাতের খাবার ঠিকমতো না খাওয়ার ফলে ওজন বাড়া, ঘুমের সমস্যা এবং নানা রোগের আশঙ্কা তৈরি হয়। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি ও পথ্যবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, রাতের খাবার একজন মানুষের শরীর গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। রাতে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়ায় খাবার হজমে সময় লাগে বেশি, ফলে কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি বেশি থাকলে তা চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। তাই রাতের খাবারে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার রাখা উচিত।

সাধারণ সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে ঘুমানোর দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। দুপুরের তুলনায় একটু কম পরিমাণে ভাত বা রুটি খেলেই ভালো। তেল-মসলা ও চর্বিযুক্ত খাবার যেমন—পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারি, কাবাব কিংবা ফ্রায়েড চিকেন রাতে এড়িয়ে চলা ভালো। তার বদলে ঝোলজাতীয় মাছ বা মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে। বেশি তেলে ভাজা সবজির পরিবর্তে অল্প তেলে রান্না করা সবজি বা সবজির ভর্তা খাওয়া উপকারী। হজমে সহায়তার জন্য খাবারের শেষে টক দই খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। যাদের ওজন বেশি, তাদের ক্ষেত্রে সন্ধ্যায় অর্থাৎ ঘুমানোর তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলা উত্তম। এতে খাবার হজম হয়ে পাকস্থলী খালি থাকে এবং ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে। তবে অনেকে রাতে ঘুমানোর আগে ক্ষুধা অনুভব করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে কম ক্যালরি ও উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ হালকা খাবার খাওয়া যেতে পারে।

রাতের খাবারে একটি মাত্র প্রধান কার্বোহাইড্রেট উৎস বেছে নেওয়া উচিত—ভাত, রুটি কিংবা নুডলসের মধ্যে যেকোনো একটি। মাছ বা মুরগির মাংস ঝোল করে খাওয়া ভালো, ভাজা বা ভুনা নয়। প্রতিদিনের মেন্যুতে সবজি রাখা জরুরি, তবে তা হালকা তেলে রান্না হওয়া উচিত। তেলের ব্যবহার একেবারে না চাইলে সেদ্ধ সবজি বা ভর্তাও খাওয়া যায়। ডাল, সালাদ এবং ফলের সালাদ রাখা যেতে পারে। খাবারের পরে পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু বিরতি নিয়ে খাওয়াই ভালো। সব মিলিয়ে বলা যায়, রাতের খাবারে ভারসাম্য ও সচেতনতা বজায় রাখলে শরীর থাকবে সুস্থ, ঘুম হবে আরামদায়ক এবং ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।


সর্বশেষ সংবাদ