ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে ইরানের মিসাইল, ক্ষতিগ্রস্ত সামরিক ঘাঁটি

  © সংগৃহীত

শত শত ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করেছে ইরান। ইসরায়েল তার অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে বেশিরভাগ ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র রুখে দিলেও বেশ কয়েকটি মিসাইল আঘাত হেনেছে ইসরায়েল ভূখন্ডে। খবর আল জাজিরা ও রয়টার্সের।

সিরিয়ায় ইরান দূতাবাসে হামলায় তাদের শীর্ষ কমান্ডারসহ ১৩ জন নিহতের প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইসরায়েলে এই হামলা চালিয়েছে ইরান। এরই জের ধরে রোববার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে সরাসরি ইসরায়েলের ওপর এই হামলা শুরু করে তেহরান। 

হামলার সময় ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান দুই শতাধিক মিসাইল ও ড্রোন নিক্ষেপ করে এবং এতে ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটি ‘কিছুটা’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এতে ৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইরান ইসরায়েলে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার বেশিরভাগই ইসরায়েলের সীমান্তের বাইরে আটকানো হয়েছে। তার মধ্যে ১০টিরও বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরানি হামলায় তাদের সামরিক ঘাঁটির ‘সামান্য ক্ষতি’ হয়েছে বলে ইসরায়েল জানিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইরান ইসরায়েলে ২০০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং তাদের ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ‘অংশীদারদের’ সহায়তায় আটকে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কিছু সংখ্যক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে পড়েছে, যার ফলে একটি সামরিক ঘাঁটির সামান্য ক্ষতি হয়েছে, তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শুধুমাত্র একটি ছোট মেয়ে আহত হয়েছে, এবং আমরা আশা করি সে ভালো হয়ে যাবে।’

এমন অবস্থায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের বোমা হামলার শেল্টারের কাছাকাছি থাকার নির্দেশ দিয়েছে। রোববার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) নজিরবিহীন হামলা চালানো শুরু করেছে এবং তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলজুড়ে শহরগুলোতে বিমান হামলার সাইরেন এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

আইআরজিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটকে লক্ষ্য করে ইহুদিবাদীদের অপরাধের প্রতিক্রিয়ায় আমরা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে একটি অভিযান শুরু করেছি। অধিকৃত অঞ্চলে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দিয়ে অভিযান শুরু করা হয়েছে।

এদিকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর বেশিরভাগকেই ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করার আগে এই অঞ্চলের কৌশলগত মিত্রদের সাথে তার ‘অ্যারো’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে আটকে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। এতে বিপ্লবী গার্ডের দুই কমান্ডারসহ ৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিহত হন। এছাড়া এই হামলায় মোট ১৩ জন নিহত হন। এরপরই প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ইসরায়েলে হামলার ঘোষণা দেয় তেহরান।


সর্বশেষ সংবাদ