ইমরান খানের সংসদ সদস্য পদ বাতিল, ৫ বছর ভোটে নিষিদ্ধ 

ইমরান খান
ইমরান খান   © সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় উপহার তোশাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ সাধারণ পরিষদের সদস্যপদ হারিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খান। সেই সঙ্গে আগামী পাঁচ বছর জাতীয় ও প্রাদেশিক কোনো আইনসভার নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না তিনি।

পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের একটি বেঞ্চ শুক্রবার এই রায় ঘোষণা করেন।

দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে কমিশনের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ মামলাটির শুনানি গ্রহণ করেন।

শুনানিতে ইমরান খানের আইনজীবী দাবি করেন, নিয়ম মেনে তোশাখানা থেকে উপহার কিনেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়।

উপহার কেনার অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন কমিশনের সদস্যরা। জবাবে ইমরান খানের আইনজীবী বলেন, তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য কমিশনকে দেবেন না।

আলি গোহার খান, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) মোহসিন নওয়াজ রানঝা ও অন্য পাঁচজন মিলে ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণার আবেদন করেছিলেন।

তোশাখানা মামলা

গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে।

তোশাখানার নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন তারা পরে এগুলো কিনে নিতে পারবেন। কিনে নেওয়ার পর এসব উপহার বিক্রির বিষয়টি অবৈধ না হলেও অনেকেই এটিকে অনৈতিক বা নীতিগতভাবে ভুল বলে মনে করেন।

ইমরানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করা হয় তাতে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জিনিসের ৫৮টি বাক্স উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন।

গত অগাস্টে পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সবচেয়ে বড় শরিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসনি নওয়াজ রানঝা ইমরানের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় তোষাখানা থেকে বিদেশি বিশিষ্টজনদের দেওয়া উপহার কিনলেও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে সেগুলোর উল্লেখ করেননি।  

আরও পড়ুন: ২৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমিয়ে অসুস্থ অভিনেতা

এ সম্পর্কে গত ২২ আগস্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ ‍নির্বাচনক কমিশনকে দেওয়া এক চিঠিতে ইমরান খানকে ‘অসৎ’ ঘোষণা করে তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজের ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে নামমাত্র মূল্যে এসব উপহার নিয়েছেন এবং এসব উপহারের অধিকাংশই তিনি বিক্রি করেছেন।

উপহারের মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে। এসব উপহারের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপি। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এসব উপহার নিয়েছিলেন বলে আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন স্পিকার।


সর্বশেষ সংবাদ