শিক্ষা আর স্কুলে নেই, সব চলে গেছে কোচিং সেন্টারে

লেখক রোজিনা ইসলাম
লেখক রোজিনা ইসলাম  © সংগৃহীত

এসব অভিযোগ অনেকদিনের, কিন্তু নিজের সন্তানের লেখাপড়া ও নিরাপত্তার কথা ভেবে কেউ মুখ খোলেন না। রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষকেরা তাদের কাছে যে শিক্ষার্থীরা পড়েন তাদেরই যত্ন নেন, তাদেরকেই চিনেন, সেই শিক্ষার্থীদের সাথেই ভালো ব্যবহার করেন, ক্লাসেও সেই শিক্ষার্থীদেরই গুরুত্ব বেশি।

ওদেরকেই ক্লাসে রিডিং পড়তে বলেন, ব্লাকবোর্ডে লিখতে বলেন। আর যারা কোচিং করে না তারা বঞ্চিত থেকে যায় স্কুলের সব অ্যাকটিভিটিস থেকে। ক্লাসে যেই শিক্ষকেরা ভালো করে পড়ান না, কোচিং এ সেই শিক্ষাটাই দিচ্ছেন টাকার বিনিময়ে। শ্রেণীকক্ষের আদলে কোচিং ক্লাস নিচ্ছে মাইক দিয়ে এমন চিত্র ও দেখেছি।

শিক্ষা এখন আর স্কুলে নেই, সব চলে গেছে কোচিং সেন্টারে। আজ একজন অভিভাবক বললো তার মেয়ে ৮০ জনের সাথে এক শিক্ষকের বাসায় কোচিং করে, তেমন কিছুই পড়ায় না, তবু পড়াতে হয় বাধ্য হয়ে। আরেকজন বললেন, কোচিং না করালে শিক্ষকেরা ভীষণ বেজার হন। আশ্চর্য লাগে যে এখন প্রথম শ্রেণি থেকেই এ বাণিজ্য শুরু হয়।

এখন ক্লাস থ্রী-ফোর-ফাইভের বাচ্চারা প্রতি বিষয়ে স্কুলের শিক্ষকদের কাছে কোচিং করে। আগে শুনতাম কোচিং না করালে ফেল করিয়ে দেয় বা কম নম্বর দেয়, কাল আমার এক বন্ধু বলল, এদের অনেকে শিক্ষার্থীদের পুরো বাপ-মা তুলে গালাগাল দেয়। এমনও শিক্ষক রয়েছেন, তার কাছে না পড়লে মানসিক অত্যাচার করা হয়। এ ধরনের শিক্ষকদের কাছে রীতিমতো জিম্মি হয়ে গেছে অভিভাবকেরা।

অভিভাবকেরা কোচিং করাতে সন্তানদের জন্য দুই দিকেই অর্থ ব্যয় করছেন। একদিকে স্কুলে বেতন দিতে হচ্ছে, আরেকদিক কোচিং শিক্ষকদের কাছে চারগুন টাকা দিয়ে পড়াতে হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর সৃজনশীল শিক্ষার্থী পাওয়া যাবে না। ক্লাসে প্রথম হবে, কিন্তু দুনিয়াকে বোঝার মতো জ্ঞানী হবে না।

লেখক: সাংবাদিক

(ফেসবুক থেকে নেওয়া)


সর্বশেষ সংবাদ