ডেটিং অ্যাপে প্রেম, বাংলাদেশে এসে প্রতারিত অস্ট্রেলিয়ান তরুণী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২২, ০৩:০২ PM , আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২, ০৩:০২ PM
অস্ট্রেলিয়ার তরুণী কেইলাহ জেন সোমার্স (২৪)। অনলাইন ডেটিং অ্যাপে পরিচয় হয় নাইজেরিয়ান তরুণ জর্জ একপুনবির সাথে। পরিচয় থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রণয়ে। প্রেমের টানে ঢাকাতে এসে প্রতারণার শিকার হয়ে এখন প্রায় নিঃস্ব তিনি। তবে ঢাকায় এসে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে এখানেই বাকী জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে কেইলাহ নাম নিয়েছেন ‘ফাতেমা আমুল। মুসলিম মেয়েদের মতো হিজাব পরাও শুরু করেছে।
কেইলাহ অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা। জর্জ ঢাকায় গার্মেন্টের ব্যবসা করেন বলে পরিচয় দিয়েছিলেন তাকে। জর্জের ডাকে সাড়া দিয়ে গত ৩০ নভেম্বর তিনি ঢাকায় আসেন। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় জর্জের ভাড়া বাসায় ওঠেন তিনি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্য জর্জ বদলে যায়।
তিনি বুঝতে পারেন জর্জ আসলে কোনো কাজ করেন না। এমনকি বাংলাদেশে তাঁর ভিসার মেয়াদও অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। একপর্যায়ে জর্জ তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারির আগে জর্জ বাসা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যান। আর যাওয়ার সময় তার ব্যাগে থাকা প্রায় দেড় হাজার ডলার চুরি করে নিয়ে যান। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি জর্জের বাসা থেকে বেরিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেন।
আরও পড়ুন: প্রভোস্টকে ভেতরে রেখে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিল চবি ছাত্রীরা
ঢাকায় আসর পর থেকে থাকা-খাওয়া, ঘুরাঘুরির সব খরচ কেইলাহকে দিতে হয়েছে এতে তার বেশিরভাগ ভাগ ডলার খরচ হয়ে গেছে। তখন কেইলাহ ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে যোগাযোগ করলে তারা বিমান ভাড়া ও যাতায়াত খরচ বাবদ আড়াই হাজার ডলার ঋণ দেয়। কিন্তু এরপর তিনি বাংলাদেশেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে দূতাবাসের দেওয়া লোনের অর্থ দিয়েই চলছে।
ঢাকায় এসে প্রতারণার শিকার হলেও বাংলাদেশের প্রকৃতি ও বাঙালির মায়ায় বাঁধা পড়েছেন কেইলাহ। তাই ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা কেইলাহ আর অস্ট্রেলিয়ায় না ফিরে এখানেই জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান। ঢাকায় আসার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে কেইলাহ নাম নিয়েছেন ‘ফাতেমা আমুল’। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে গেছি। দেশের বেশির ভাগ মানুষের ধর্মটাকেই নিজের বলে মনে হয়েছে। মুসলিম মেয়েদের মতো হিজাব পরাও শুরু করেছি। ’
জর্জের প্রতারণার বিচার চেয়ে কেইলাহ বলেন, আমি চাই না সে আবার আমার জীবনে ফিরে আসুক। তার বিচার হোক। এখন ধীরে ধীরে বাংলা শিখা শুরু করেছেন কেইলাহ। তার মধ্যে ‘জি’, ‘কাও (খাও)’, ‘এই মামা’ শব্দগুলো বলে নিজেই হাসতে শুরু করলেন তিনি।