৩ দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মহাসমাবেশ
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৩৬ PM , আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৩:০২ PM
জাতীয়করণ হওয়া দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেলের অর্থ ফেরত দেওয়াসহ ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করছেন প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোট।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে মহাসমাবেশ শুরু হয়। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাথমিকের প্রায় তিন হাজারের মতো শিক্ষক অংশ নিয়েছেন।
তাদের দাবি সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মহাসমাবেশ করছেন তারা। এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান সংগঠনটির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অধিগ্রহণকৃত বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক ( চাকুরী শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা ২০১৩ - বিধি ( ৯ ) উপবিধি ( ১ ) এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে । যেমন অধিগ্রহণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের উল্লেখিত বিধি বিধান অনুযায়ী কার্যকর (২০ % ) চাকরিকালের ভিত্তিতে জ্যৈষ্ঠতা নির্ধারণ , পদোন্নতি , সিলেকশন গ্রেড এবং প্রযোজ্য টাইমস্কেল প্রাপ্য হয়ে আসছেন । দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ০৮ / ১০ / ২০১৭ ইং তারিখে এক পত্রের মাধ্যমে বিভাগ ওয়ারী , জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহোদয়গণকে অধিদপ্তরে ডেকে এনে কার্যকর চাকুরীকালের ( ৫০ % ) ভিত্তিতে চাকরিকাল গণনা না করে বিধি ৯ উপবিধি ( ১ ) এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কার্যকর চাকরিকালের পরিবর্তে ০১/০১/২০১৩ ( জাতীয়করণের তারিখ ) ধরে জ্যৈষ্ঠতা তালিকা করার মৌখিক নির্দেশনা দেন । উক্ত তালিকা অনুযায়ী পুরাতন বিদ্যালয় সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ১৮ হাজার সহকারী শিক্ষক , প্রধান শিক্ষকের পদে চলতি দায়িত্ব পেলেও সারাদেশে অনেক জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও একজনকে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয় নাই । তারা বলেন , জাতীয়করণকৃত সহকারী শিক্ষকদের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক যতগুলি আইন ও পরিপত্র জারি করা হয়েছে তার কোনটাতেই জাতীয়করণের তারিখ অর্থাৎ ০১/০১/২০১৩ ধরে গণনা করার কথাবলা হয় নাই , বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে কার্যকর চাকরিকাল ( ৫০ % ) হিসাব ধরে গণনা করার কথা উল্লেখ আছে । দীর্ঘ ৮ বছর পর একই কায়দায় বিধি ৯ উপবিধি ( ১ ) এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছুসংখ্যক ষড়যন্ত্রকারীর কুপ্ররোচনায় গেজেট সংশোধন করে জাতীয়করণের পূর্বের ৫০ % চাকরিকাল গণনা বাদ দিয়ে ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের ভোগকৃত টাইমস্কেল ফেরত প্রদানের জন্য একটি পত্র জারি করেন । যার কারণে ৪৮,৭২০ জন শিক্ষক চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন । ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষক মৃত্যুবরণ ও অবসরে চলে গিয়ে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করছেন বলেও জানান তারা। তাই তারা অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পত্রটি প্রত্যাহার করার দাবি জানান। এছাড়াও গেজেট প্রকাশ করার সময় কিছু প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার পরও ভুল বশত গেজেটে প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রকাশিত না হয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রকাশিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন বক্তারা।
একই দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ১৪ অক্টোবর ২ ঘণ্টা, ১৫ অক্টোবর ৩ ঘণ্টা ও ১৬ অক্টোবর অর্ধদিবস ও ১৭ অক্টোবর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছিলেন বলে জানা যায়। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র মো. বদরুল আলম বলেছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসন না করে কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন মূলক আচরণ করছেন। মহাসমাবেশ থেকে আরো কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: আসন খালি থাকলে বেসরকারি স্কুলে সরাসরি ভর্তি
শিক্ষক মহাজোটের দাবিগুলো হচ্ছে- জাতীয়করণ হওয়া দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেলের অর্থ ফেরত দিতে হবে, এ সংক্রান্ত গত বছরের ১২ অক্টোবরের আদেশ বাতিল করা; প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক জাতীয়করণ-২০১৩ নীতিমালা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ শিক্ষককে জ্যেষ্ঠতা দেওয়া ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে পদোন্নতি পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
আরও পড়ুন: স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন পালিয়ে যাওয়া দুই স্কুলছাত্রী
একই দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ১৪ অক্টোবর ২ ঘণ্টা, ১৫ অক্টোবর ৩ ঘণ্টা ও ১৬ অক্টোবর অর্ধদিবস ও ১৭ অক্টোবর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছিলেন তারা। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র মো. বদরুল আলম বলেছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসন না করে কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন মূলক আচরণ করছেন। মহাসমাবেশ থেকে আরো কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে।