‘আজাদী’ স্লোগানে উত্তাল কোলকাতা (ভিডিও)
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২০, ০৮:৪৮ PM , আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০, ০৯:৪৯ PM
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসির প্রতিবাদে উত্তপ্ত পরিবেশের মাঝেই রবিবার কলকাতা সফরে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রবল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে শহীদ মিনারে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বলতে গিয়ে অমিত শাহ এদিন জোরের সঙ্গে ঘোষনা করেছেন, যতই নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করা হোক, রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন লাগু করা থেকে কেন্দ্রকে আটকানো যাবে না। সংসদে এই আইন পাশ করানোর জন্য শহীদ মিনারের সভায় অমিত শাহকে অভিনন্দন জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি।
তবে এদিনের সভায় আসার পথে বিজেপি সমর্থকদের মধ্য থেকে দিল্লির মতই গোলি মারো স্লোগান ধ্বনিত হয়েছে। বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বলতে শোনা গেছে, ‘দেশ কে গদ্দারোঁ কো / গোলি মারো সালোঁ কো’। এদিন ঘোষনা অনুযায়ী বাম ও কংগ্রেস কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় অমিত শাহর সফরের প্রতিবাদে কালো পতাকা দেখিয়েছে। স্লোগান উঠেছে গো ব্যাক অমিত শাহ। অমিত শাহর সফরের প্রতিবাদে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিল বেশ কিছু ছাত্র সংগঠন ও ছাত্র-ছাত্রী।
বিমান বন্দরের ১ নম্বর গেটে বাম সমর্থকরা অমিত শাহকে কালো পাতাকা ও কালো বেলুন দেখিয়েছে। পাশাপাশি, পার্কসার্কাসে কোয়েস্ট মলের সামনে থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত একটি মিছিল থেকেও নাগরিকত্বআইনের বিরোধীতায় স্লোগান দেওয়া হয়েছে। ধর্মতলায় নাগরিকত্ব আইন বিরোধী একটি মিছিল অমিত শাহর সভামুখী বিজেপির একটি মিছিলের মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি প্রবল উত্তপ্ত হয়েছিল। পুলিশের আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। এদিন শহিদ মিনারের সভা থেকে অমিত শাহ তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, মমতা একসময় শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। এখন তুষ্টিকরণের রাজনীতি হচ্ছে। মুসলমান ভাইবোনদের বোঝানো হচ্ছে, নাগরিকত্ব আইনের ফলে তাদের নাগরিকত্ব চলে যাবে। আপনাদের বলছি কারও নাগরিকত্ব যাবে না। এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য। কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, বাম ও কংগ্রেস একযোগ বিরোধিতা করছে। এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রের নীতি প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেও নাগরিকত্ব আইন থেকে পিছু হঠছে না সরকার। তিনি বলেন, মমতাকে প্রশ্ন করতে চাই, এইসব শরনার্থীদের কেন আপন মনে হয় না আপনার? কেন অনুপ্রবেশকারীদেরই আপনার আপন বলে মনে হয়? সাফ বলছি, শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দিয়েই ছাড়ব। মমতা আমাদের রুখতে পারবেন না। আপনি সিএএ-র বিরোধিতা করছেন মানে হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুরের বিরোধিতা করছেন। সত্তর সাল ধরে সমস্যায় থাকা এইসব মানুষদের নাগরিকত্ব দিয়েই ছাড়ব। এদিনের সভা থেকে দিদির উদ্দেশ্যে মানুষকে ’আর নয় অন্যায়’ বলে তোপ দাগার আহ্বান জানিয়েছেন। এবার এখানে শুরু হবে আর নয় অন্যায় আন্দোলন। আর নয় অন্যায় স্লোগান সঙ্গে নিয়ে ঘরে ঘরে যাবে বিজেপির কর্মকর্তারা। আগামী নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপিকে সোনার বাংলা গড়ার সুযোগ দেবার আহ্বানও জানিয়েছেন অমিত শাহ। তার ঘোষনা, লোকসভায় ১৮ আসন জিতেছি। একুশে দুই তৃতীয়াংশ আসন জিতে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। এই যাত্রা থামবে না। এই যাত্রা নতুন বাংলা গড়ার যাত্রা, কোটি কোটি শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার যাত্রা, সোনার বাংলা গড়ার যাত্রা। শাহ আরও বলেছেন, এখানে হাজার হাজার বিজেপি সমর্থকের ওপরে অত্যাচার হয়েছে, মিথ্যে মামলা করা হয়্ছে, গুলি চলেছে। মমতা দিদি, আপনি এতকিছু করেও আমাদের থামাতে পেরেছেন কি? থামাতে পারবেন না।
রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে সমর্থকদের আশস্ত করে অমিত শাহ বলেছেন, অযোধ্যাতে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ৫০০ বছর লড়াই করছি। মোদীজি রাম মন্দির তৈরির জন্য ট্রাস্ট গঠন করেছেন। সত্তর বছর ধরে কংগ্রেস, সপা, বসপা রাম মন্দিরের বিরোধিতা করে আসছে। আপনাদের কথা দিচ্ছি কয়েক মাসের মধ্যে অয়োধ্যায় রাম মন্দির হবে।