পরিপাটি না হয়ে জুমায় গেলে যা হারাবেন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৪ PM , আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০২:৩৮ AM

সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমাবার। ইসলামে এই দিনের মর্যাদা অনেক বেশি। জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল ও আদব রয়েছে। এর মধ্যে ভালোভাবে গোসল করা, পরিপাটি হয়ে মসজিদে যাওয়া অন্যতম।
প্রিয়নবী (সা.) সাহাবিদের (রা.) জুমার দিন গোসলের ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে, যথাসাধ্য উত্তম রূপে পবিত্রতা অর্জন করে এবং নিজের তেল থেকে ব্যবহার করে বা নিজ ঘরের সুগন্ধি ব্যবহার করে, অতঃপর বের হয় এবং দুজন লোকের মধ্যে ফাঁক না করে (অর্থাৎ পরে গিয়ে মানুষের ঘাড় টপকে সামনে যাওয়ার চেষ্টা না করে), অতঃপর তার নির্ধারিত নামাজ আদায় করে এবং ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় চুপ থাকে, তাহলে তার সে জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত সময়ের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি: ৮৮৩)
এই হাদিসে জুমার দিন উত্তম রূপে গোসল করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই জুমার দিন উত্তম রূপে গোসল করা ও পরিচ্ছন্ন হওয়া জরুরি। যদি সামর্থ্য থাকে, সুগন্ধি ব্যবহার করা ভালো। এ ছাড়া ভালো জামা পরে মসজিদে যাওয়া উত্তম। রাসুল (সা.) নিজেও এই দিন ভালো ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতেন।
কিন্তু তার উল্টোটা করলে অর্থাৎ অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় জুমার নামাজ পড়া বা মসজিদের আদব না মানা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চয়ই ফজিলত লাভে বড় বাঁধা।
আরেক হাদিসে আউস ইবনে আউস (রা.) বর্ণনা করেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তম রূপে গোসল করবে এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও এক বছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)
এই হাদিসেও পরিচ্ছন্নতার কথা প্রথমেই উল্লখ করা হয়েছে। শুধু জুমার নামাজ নয়, অন্য যেকোনো নামাজেও পূত-পবিত্র হয়ে, সতেজ ও প্রফুল্ল মনে নামাজে দাঁড়ানো উচিত। কারণ নামাজ হলো বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সাক্ষাৎস্বরূপ। তাই মহান প্রভুকে হাজিরা দেওয়ার জন্য গুরুত্ব সহকারে, পরিপাটি হয়ে, উত্তম পোশাকে নামাজ আদায় করা অবশ্যই অনেক বড় শিষ্টাচার।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা (সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ) গ্রহণ করো।’ (সুরা আরাফ: ৩১)
সুতরাং সামর্থ্য অনুযায়ী যত ভালো কাপড় পাওয়া যায়, তা পরিধান করা উত্তম। তবে পুরনো কাপড় পরাতেও দোষ নেই। তা যেন পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। বিশেষ করে জুমার দিন এ ব্যাপারে বেশি সচেতনতা কাম্য। তবে, অহংকার আসে এমন কাপড় পরিধান না করাই বাঞ্ছনীয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩৩)
তবে জুমার দিনের গোসল ফরজ নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন শুধু অজু করে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট। আর যে গোসল করে, সেটা অবশ্যই উত্তম।’ (তিরমিজি: ৪৯৭; মিশকাত: ৫৪০)