২ ছেলের বায়নায় রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলেন মা, সবাই ফিরলেন লাশ হয়ে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৮ AM , আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৬ AM
দুই ছেলের আবদারে রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে গিয়েছিলেন মা নাজিয়া। তবে বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে আর জীবন্ত ফেরা হলো না তাদের। মা ও দুই সন্তান সবাই আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আহাজারি করছিলেন নাজিয়ার পরিবার। দুই সন্তান ও প্রিয়তমা স্ত্রী নাজিয়াকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার স্বামী আশিক।
তবে আশিক সে সময় ছিলেন অফিসে। তাই হয়ত করুণ এই মৃত্যু থেকে বেঁচে গেছেন তিনি। তবে স্ত্রী, সন্তান হারানোর বেদনা হয়ত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে বয়ে বেড়াতে হবে। ছেলেদের আবদারের বিষয়টি তাকে জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী নাজিয়া। তিনি অফিসে থাকায় স্ত্রীকে বলেন, ছেলেদের নিয়ে পাশেই কোনও একটি রেস্টুরেন্ট যেতে।
এরপর নাজিয়া দুই ছেলেকে নিয়ে যান খানাস নামে একটি রেস্টুরেন্টে। সেখানে গিয়ে বার্গার খেয়েছেন সবাই। কিন্তু খাওয়া শেষে রেস্টুরেন্ট থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেননি। এই খাওয়া যে শেষ খাওয়া হবে, ঘুণাক্ষরেও কেউ ভাবতে পারেননি। বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে মারা গেছেন তিন জনই।
আরও পড়ুন: প্রাণ হারালেন ভিকারুননিসার শিক্ষিকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে
নাজিয়ার স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, আশিক-নাজিয়া তাদের সন্তানদের নিয়ে বেইলি রোডের বেইলি রিচ অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। আশিকের জন্ম ও বেড়ে ওঠাও বেইলি রোড এলাকায়। রিফাত জানান, আগুন লাগার পর নাজিয়া স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন। এক পর্যায়ে ছোট ছেলে আয়ানকে হারিয়ে ফেলেন। পরে সবাই দগ্ধ হয়ে মারা যান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামে একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।