রবিউল খন্দকার মাহি © সংগৃহীত
রবিউল খন্দকার মাহি (২৭)। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৯ সালে তিনি সরকারিভাবে তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি পেয়েছেন। সেইসঙ্গে তাকে সরকারি ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। মাত্র সাত বছর বয়সে বাড়ি ছেড়েছেন তিনি। জীবনে পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ প্রতিকূলতা, তবুও থেমে যাননি তিনি। বাধা পেরিয়ে বর্তমানে তিনি মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান গ্রামের ইলিয়াস হোসেন ও ফৌজিয়া দম্পতির বড় সন্তান মাহি। মাত্র ৭ বছর বয়সেই তিনি বুঝতে পারেন তার বয়সী অন্যদের থেকে তিনি আলাদা। এরপর নিজের মতো মানুষদের খুঁজতে গিয়ে তিনি চলে যান পীরগঞ্জের খালাশপীরহাটে। সেখানেই গত ১৮ বছর ধরে হিজড়া সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতির সঙ্গে বসবাস করছেন। তিনি পীরগঞ্জের ভোটারও হয়েছেন।
মাহি ২০১৫ সালে ছড়ান দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে কেশবপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর ২০২০ সালে খালাশপীর বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে এমএ প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি ধর্মীয় ও সমাজসেবামূলক কাজের সাথে যুক্ত।
নিজের জীবন সম্পর্কে রবিউল খন্দকার মাহি বলেন,, আমি মাস্টার্স শেষে পরিবার পরিকল্পনা বা সমাজসেবা বিভাগে সরকারি চাকরি করে মানুষের সেবা করতে চাই। কারণ আমি তো বিয়েও করতে পারব না। আমরা প্রতিটি পদেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমার জীবনের কোনো পিছুটান নেই। আমি গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনা টাকায় ব্লাড ম্যানেজ করে দেই এবং আমিও ব্লাড দেই। এছাড়াও মসজিদ ও মাঠ উন্নয়ন, ওয়াজ মাহফিল পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানেও আমার সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করি।
হিজড়া সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতি জানান, সরকারিভাবে পীরগঞ্জ উপজেলায় ৫৪ জন হিজড়া রয়েছেন। আমরা সামাজিক মর্যাদা চাই।