মোসা. তনিমা ওরফে তন্বী © সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনা বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক মোতালেব শিকদারকে গুলিবিদ্ধের ঘটনায় যুবশক্তির নেত্রী মোসা. তনিমা ওরফে তন্বীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে খুলনা নগরীর সদর থানা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন
খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক তৈমুর ইসলাম।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে খুলনা নগরীর গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশের আল আকসা মসজিদ সড়কের মুক্তা হাউজে গুলিবিদ্ধ হন মোতালেব শিকদার। গত ১ নভেম্বর মুক্তা হাউজের একটি কক্ষ ভাড়া নেন মোসা. তনিমা ওরফে তন্বী। ওই ভাড়া নেওয়া কক্ষেই গুলির ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর জাতীয় যুবশক্তির খুলনা জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই কমিটিতে আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. তরিকুল ইসলাম এবং সদস্যসচিব ছিলেন ডা. জাহেদুল ইসলাম। কমিটিতে ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিবের পদে দায়িত্ব পান মোসা. তনিমা।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম জানান, রবিবার রাত থেকে মোতালেব শিকদার ওই কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সোমবার সকাল ১১টার আগে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরিচিত ব্যক্তিদের দ্বারাই তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে পুলিশের ধারণা। ঘটনার পর থেকে মোসা. তনিমা পলাতক ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ২০
বাড়ির মালিক আশরাফুন নাহার জানান, গত ১ নভেম্বর তন্বী নামের এক নারী ভবনের একটি কক্ষ ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন এবং স্বামী-স্ত্রী থাকবেন বলে জানান। ভাড়া নেওয়ার পর থেকেই তার কক্ষে অপরিচিত পুরুষের আসা-যাওয়া বেড়ে যায়। বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিভিন্ন সময় খালাতো ভাইসহ ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিতেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ১ ডিসেম্বর তাদের বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাসাটি ছাড়ার কথা ছিল। ওই কক্ষেই গুলির ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।
এদিকে পুলিশি তদন্তে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশের একটি ফার্মেসি থেকে সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোতালেব শিকদার ও তার দুই সহযোগী একটি গাড়ি থেকে নেমে মুক্তা হাউজের দিকে যাচ্ছেন। সোমবার সকাল ১০টা ৫৯ মিনিটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কান চেপে ধরে তাকে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তন্বী নামের ওই নারী প্রায় এক মাস আগে সোনাডাঙ্গা এলাকার আল আকসা মসজিদ গলির ওই বাসাটি ভাড়া নেন। এরপর থেকে তার স্বামীসহ বেশ কয়েকজনের নিয়মিত যাতায়াত ছিল সেখানে। বিভিন্ন সময় ওই বাসায় আসতেন মোতালেব শিকদার। রবিবার রাতে মোতালেবসহ বেশ কয়েকজন বাসাটিতে প্রবেশ করেন। পরে নিজেদের মধ্যে বিবাদের জেরে সোমবার সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে তাকে গুলি করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বাসার বিভিন্ন স্থানে রক্তের চিহ্ন পায়। এছাড়া ওই কক্ষ থেকে একটি গুলির খোসা, ইয়াবা সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে বিস্তারিত যাচাই চলছে।